Kolkata Police

পুলিশের বিরুদ্ধেই যৌন নিগ্রহের অভিযোগ

কলকাতা পুলিশের তরফে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি কেউই।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০৩:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

থানাতেই যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করলেন কলকাতা পুলিশের এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার। আনন্দপুর থানার ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের অভিযোগ ওই থানারই এক সাব ইনস্পেক্টরের (এসআই) বিরুদ্ধে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা ও লালবাজারের অন্য পুলিশকর্তাদের কাছে ‘স্পিড পোস্ট’-এ অভিযোগ করার পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টেও এ নিয়ে একটি পিটিশন দায়ের করেছেন অভিযোগকারিণী।

Advertisement

শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি যা ঘটেছে, তার পরে চুপ থাকতে পারিনি। গত ডিসেম্বরেও ওই এসআই একই কাজ করেছিলেন। তবে সে সময়ে সকলে ব্যাপারটি চেপে যেতে বলেন। আমিও সাহস দেখাতে পারিনি।’’ সেই দিন থেকেই তিনি থানায় কাজে যেতে পারছেন না বলে তরুণীর দাবি। এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি অভিযুক্ত এসআই। ওই থানার ওসি বলেন, ‘‘বড়কর্তারা বিষয়টি দেখছেন।’’

কলকাতা পুলিশের তরফে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি কেউই। তবে লালবাজারের যুগ্ম কমিশনার পদের এক কর্তা জানান, কলকাতা পুলিশের অভিযোগ সংক্রান্ত সেল-এ বিষয়টি পাঠানো হয়েছে। অভিযোগকারিণীকে লালবাজারে ডেকে দু’দিন কথা বলা হয়েছে। এর পরে গত বুধবারই লালবাজারের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির (আইসিসি) তরফে তার প্রধান তথা স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের ডেপুটি কমিশনার অভিযোগকারিণীকে একটি চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগপত্রের ছ’টি প্রতিলিপি ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের নাম জমা করতে বলেছেন।

Advertisement

অভিযোগকারিণীকে পাঠানো সেই চিঠি। নিজস্ব চিত্র

অশোকনগরের বাসিন্দা ওই অভিযোগকারিণীর দাবি, ২০১৭ সালে কলকাতা পুলিশে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে যোগ দেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে তাঁকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন অভিযুক্ত এসআই। অভিযোগকারিণীর কথায়, ‘‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি থানার লক-আপের পাশে সার্জেন্টদের বসার ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ওই এসআই আমাকে সার্জেন্টদের ঘরে কয়েকটা কাগজ রেখে আসতে বলেন। কাগজ রাখতে গেলে পিছন থেকে এসআই জড়িয়ে ধরেন। কিছুতেই ছাড়াতে পারছিলাম না। শরীরের নানা অংশে তিনি হাত দেন।’’ এর পর থেকেই বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য ওই এসআই চাপ দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগকারিণীর দাবি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতা পুলিশের কর্তাদের কাছে অভিযোগ করেন তরুণী।

থানার বড়বাবুকে জানালেন না কেন? তরুণীর দাবি, ‘‘অভিযোগপত্রে লিখেছি। থানায় অঘোষিত নিয়ম চলে যে, কোনও নিচুতলার কর্মী সরাসরি বড়বাবুর কাছে কথা বলতে যেতে পারবেন না। যেতে হবে ওই এসআই-এর মাধ্যমেই। ওই এসআই-এর অনেক ক্ষমতা। তাই সাহস করে তাঁকে বলতে পারিনি।’’

তবে অভিযোগ জানানোর পরেও সমস্যা কমেনি বলেই তরুণীর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘এসআই বহাল তবিয়তেই ঘুরছেন। এক দিন থানায় গিয়ে দেখি আমাকে নিয়ে সকলে হাসাহাসি করছেন। ডিসি অফিস থেকে ডেকে কথা বলার সময়ে আমাকে বদলির কথা বলা হয়। কিন্তু আমি কেন যাব?’’

অশোকনগরে বাবা-মায়ের সংসারে মূল রোজগেরে অভিযোগকারিণী নিজেই। মা ঘরের কাজ সামলান। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাবা ছবি আঁকার কাজ করেন। অভিযোগকারিণী জানান, বিয়ে হয়েছিল তাঁরও। গার্হস্থ্য হিংসার একাধিক ঘটনার পরে স্বামীর সঙ্গে এখন আর থাকা হয় না তাঁর। বললেন, ‘‘চাকরিটার খুব দরকার, সম্মানটারও। বিচার না পেলে আমার মতো বহু মেয়েই চাকরি করতে ভয় পাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement