অর্কদীপ বাছার। ফাইল ছবি।
পুকুরে পড়ে যাওয়া বল তুলতে গিয়ে তলিয়ে যাওয়ায় মৃত্যু হল এক কলেজছাত্রের। মঙ্গলবার সকালে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরের বিবেকানন্দ কলেজের মাঠে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অর্কদীপ বাছার (২১)। তাঁর বাড়ি বেহালার রাজা রামমোহন রায় রোডে। তিনি বিবেকানন্দ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন কলেজের মাঠে ফুটবল খেলছিলেন অর্কদীপ। খেলতে খেলতে বলটি লাগোয়া পুকুরে পড়ে গেলে সেটি তুলতে যান তিনি। তখনই জলে তলিয়ে যান। স্থানীয়েরা ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে কাছেই একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতো এ দিনও অর্কদীপ বাড়ি থেকে সকাল আটটা নাগাদ বেরিয়ে কলেজের মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়েছিলেন। বেলা ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে স্নান-খাওয়া সেরে কলেজে ক্লাস করতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। তার আগেই সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটে ওই দুর্ঘটনা। এ দিন দুপুরে বিবেকানন্দ কলেজ গিয়ে দেখা গেল, পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা শোকাহত। কলেজের অধ্যক্ষ তপনকুমার পোদ্দার বলেন, ‘‘কলেজ আবাসনের এক আবাসিক পুকুরের পাশ দিয়ে আসতে আসতে অর্কদীপকে জলে তলিয়ে যেতে দেখেন। তাঁর চিৎকারে কলেজের অন্য কর্মীরা ছুটে গিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে ওকে জল থেকে তোলেন। পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে অ্যাম্বুল্যান্সে ওকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।’’ পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এ দিন অর্কদীপের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, তাঁর মা মিঠু বাছার কথা বলার অবস্থায় নেই। মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছেন। রত্নদীপ বাছার ও মিঠুর একমাত্র ছেলে অর্কদীপ মেধাবী ছাত্র ছিলেন। মৃতের মাসি মহুয়া ভাদুড়ী বলেন, ‘‘সাঁতার জানা সত্ত্বেও কী ভাবে অর্ক তলিয়ে গেল, সেটা বোঝা যাচ্ছে না।’’ স্থানীয়দের ধারণা, পুকুরে নামতে গিয়ে পাড়ের তুলনায় মাঝ বরাবর গর্ত বেশি থাকায় নিজেকে সামলাতে পারেননি অর্কদীপ। তার জেরেই সম্ভবত এই দুর্ঘটনা ঘটে। আবার, পুকুরের তলদেশে কোনও কিছুতে পা আটকে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে অনুমান। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিবেকানন্দ কলেজের ওই মাঠে পড়ুয়ারা ছাড়া বহিরাগতেরাও ঢুকতে পারেন। এ দিন সকালে মাঠে যাঁরা খেলছিলেন, তাঁদের মধ্যে একমাত্র অর্কদীপই সাঁতার জানতেন। তবু জলে ডুবে তাঁর এই মৃত্যুতে বিস্মিত সকলেই।