ফাইল ছবি
দু’বছর আগের একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সম্প্রতি রিপোর্ট চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তার পরেই সেই ঘটনায় খুনের মামলা দায়ের করে ফের তদন্ত শুরু করেছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ। বুধবার মৃতের স্ত্রীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঠাকুরপুকুর থানা এলাকার দক্ষিণপাড়া রোডের ভাড়া বাড়ি থেকে রাজা সরকার নামে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বিদ্যাসাগর স্টেটজেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রাজা ওই বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। তবে ঘটনার দিন তিনি একাই ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু পুলিশের অনুসন্ধানে খুশি হননি মৃতের বোন মালা সরকার। আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা মালা ভাইয়ের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, তা জানতে পর্ণশ্রী এবং ঠাকুরপুকুর থানায় বার বার আবেদন করেও কিছু জানতে পারেননি বলে অভিযোগ। এর পরে গত মার্চে তিনি আলিপুরদুয়ার থানায় মৃত ভাইয়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল আলিপুরদুয়ার থানা এলাকা না হওয়ায় তা পাঠানো হয় ঠাকুরপুকুর থানায়। তার পরেও ঠাকুরপুকুর থানা মামলা দায়ের করেনি, এই অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে যান অভিযোগকারিণী। আদালতে তিনি দাবি করেন, আলিপুরদুয়ার থানা জ়িরো এফআইআর দায়ের করলেও ঠাকুরপকুর থানা কিছুই করেনি। এমনকি, আদালতের কাছে তাঁর আরও অভিযোগ, বার বার কলকাতা পুলিশের দুই থানার কাছে ওই মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে জানতে চাওয়া হলেও উত্তর মেলেনি।
আদালত সূত্রের খবর, গত সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার ওই ঘটনা নিয়ে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনারকে (দক্ষিণ-পশ্চিম) ১৬ অগস্ট রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ডেপুটি কমিশনারের অধীনেই রয়েছে ঠাকুরপুকুর থানা।
লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনার দিন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনেই রাজাকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর মাথায় আঘাত ছিল। ময়না-তদন্তে সেই কথাই বলা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। এ ছাড়া, ঘটনার দিন তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না বলেও পুলিশ জানিয়েছে। তবে স্ত্রীর সঙ্গে রাজার সম্পর্ক ভাল ছিল না বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। একই সঙ্গে পুলিশের দাবি, আলিপুরদুয়ার থানা কোনও এফআইআর করেনি। তারা জিডি করে সেটি ঠাকুরপুকুর থানায় পাঠিয়েছিল। তবে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে খুনের মামলা দায়ের করে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগের সব দিক খতিয়ে দেখে হাই কোর্টের নির্দেশমতো রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলে লালবাজার সূত্রের দাবি।