যাদবপুরে শাসানি এ বার শিক্ষককে

পার্থ চক্রবর্তী নামে ওই বিজেপি-কর্মী তাঁকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজ়ম বিভাগের শিক্ষক সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:১৯
Share:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

কয়েক দিন আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিজেপির সভা থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। তার বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের প্রতিবাদের মধ্যেই যাদবপুরের এক শিক্ষককে সোশ্যাল মিডিয়া বা সমাজমাধ্যমে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির এক কর্মীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী নামে ওই বিজেপি-কর্মী তাঁকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজ়ম বিভাগের শিক্ষক সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুকে প্রোফাইলটির নাম ‘পার্থ চাক’। পার্থ পরিচিত বিজেপি-কর্মী। তিনি সান্ত্বনবাবুকে লিখেছেন, ‘স্যর আপনাকে আমরা চিনে রাখছি। আপনার ছাত্র ওখানে বিপ্লব করতে গিয়েছিল। তাই একটু-আধটু শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সময় বদলাবে স্যর, সে-কথা মনে রাখবেন।’ এর পরে পার্থ লিখেছেন, ‘ভাল থাকবেন। প্রণাম নেবেন। আপনার এক জাতীয়তাবাদী ছাত্র’। সান্ত্বনবাবু অবশ্য জানান, ওই ব্যক্তি তাঁর ছাত্র নন। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। সান্ত্বনবাবু কেন বিষয়টি অন্যদের জানিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলে পার্থের হুমকি, সান্ত্বনবাবুকে ভুগতে হবে। পার্থ বলেন, ‘‘আমি ওঁকে মেসেজ করে বলেছিলাম। উনি সেটা সকলকে জানিয়েছেন। ওঁকে তো আমাদের সামনে দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে! ‘‘ওঁদের বোঝা উচিত, দু’বছর হোক বা পাঁচ বছর, আমরাই ক্ষমতায় আসব। তখন কী হবে?’’

ঘটনার সূত্রপাত দু’দিন আগে। যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ডে বিজেপির একটি সভা থেকে সে-দিন সন্ধ্যায় যাদবপুরের এক শিক্ষিকাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষিকা-নিগ্রহের পাশাপাশি মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজ়ম বিভাগের দুই পড়ুয়া পিনাকী ঢোলে এবং রাহি হালদারকেও মারধর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ করাও হয়েছিল। পিনাকীর উপরে আক্রমণের নিন্দা করে সান্ত্বনবাবু ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। বিজেপির পক্ষ থেকেও মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেফতারের দাবিতে যাদবপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর-ও করা হয়।

Advertisement

এই মারধরের ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার ৮বি বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবাদ সভা করেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা। আজ, বৃহস্পতিবার প্রতিবাদসভা করার কথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরও (জুটা)। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এ দিন বলেন, ‘‘যারা শিক্ষকদের এই রকম ভয় দেখিয়ে অসম্মান করে, তারাই আবার নিজেদের দেশভক্ত বলে বড়াই করে!’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টির ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ বলেন, ‘‘হুমকি দিয়ে যাদবপুরের সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক-গবেষক-কর্মচারী ঐক্য ভেঙে ফেলা যাবে না। আমাদের শিরদাঁড়া শক্ত আছে, থাকবে। সময় তো পাল্টাবেই। এমন দিন আসতে আর দেরি নেই, যে-দিন ভারতের মানুষ এই দেশ-বিরোধী দলটাকেই ভারত মহাসাগরে ছুড়ে ফেলে দেবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement