‘ভোগ্ট কোয়ানাগি হারাডা সিন্ড্রোম’ নামের এই রোগের কারণে আচমকাই ৬৬ বছরের প্রৌঢ়ের দৃষ্টিশক্তি চলে গিয়েছিল। প্রতীকী ছবি।
আচমকাই দৃষ্টিশক্তি চলে গিয়েছিল। হারিয়ে ফেলেছিলেন শ্রবণ ক্ষমতাও। শরীরে শ্বেতীর মতো ছাপ দেখা দিয়েছিল। দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন বেহালার বাসিন্দা, ৬৬ বছরের প্রৌঢ়। প্রায় এক মাস কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে, সামান্য হলেও দেখতে পাচ্ছেন তিনি। অন্যান্য সমস্যাও অনেকটা মিটেছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়। ‘ভোগ্ট কোয়ানাগি হারাডা সিন্ড্রোম’ নামের এই রোগের প্রথম সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল জাপানে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের শিক্ষক-চিকিৎসক রাজা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জাপানের ওই রোগে বিশ্বে এখনও পর্যন্ত কত জন আক্রান্ত, তার যথাযথ তথ্য নেই। তবুও আশা যে রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, বেহালার নিমাই বিশ্বাস গত বছর মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হন। চিকিৎসায় তা সারলেও, শেষ সাত-আট মাস ধরে চোখে সমস্যা দেখা দেয়। রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজিতে (আরআইও) ছানি অস্ত্রোপচারও হয়। তাতেও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা ঠিক হচ্ছিল না। তার সঙ্গে শ্রবণ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় শ্বেতী হতে থাকে। সম্প্রতি দুই চোখের দৃষ্টি ও শ্রবণ ক্ষমতা পুরোপুরি চলে যায়।
নিমাইকে ফের আরআইও-তে নিয়ে আসেন পরিজনেরা। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, ওই প্রৌঢ় ‘ভোগ্ট কোয়ানাগি হারাডা সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত। ওই রোগীকে কলকাতা মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়। রাজা জানাচ্ছেন, এই রোগে এক রকম ভাইরাসের সংক্রমণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হেরফের হয়। শরীরের কোষের ক্ষতি হতে শুরু করে। যেমন রঞ্জক কোষের ক্ষতির ফলে শরীরে শ্বেতীর মতো সাদা ছোপ দেখা দিয়েছে। আবার শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তির স্নায়ুও আক্রান্ত হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘‘শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দমিয়ে রাখার জন্য ব্যবহৃত ওষুধপত্র (ইমিউনোসাপ্রেসিভ থেরাপি) অত্যন্ত সজাগ ভাবে প্রয়োগ করেই বৃদ্ধকে সুস্থ করে তোলা হচ্ছে।’’