নিমতলা ঘাটে চলছে তল্লাশি। ছবি— সংগৃহীত।
পরিজনের শেষকৃত্যে যোগ দিতে এসে গঙ্গায় নেমে নিজস্বী তুলছিলেন। তা করতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন বেলেঘাটার ছয় তরুণ। স্থানীয়দের তৎপরতায় উদ্ধার তিন জন। এক জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও খোঁজ না পাওয়া দু’জনের সন্ধানে গঙ্গায় নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
পুলিশ সূত্রে খবর, সন্তোষ শঙ্করের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন দীপক যাদব এবং বিকি সিংহ নামে দু’জন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বেলেঘাটা এলাকা থেকে দেহ সৎকারের জন্য নিমতলা ঘাটে এসেছিলেন কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে জনা ছ’য়েক বসেছিলেন ঘাটের ধারে। অভিযোগ, বান আসছে এই ঘোষণা শুনেও তাঁরা নিজস্বী তুলতে মগ্ন ছিলেন। এর পরই জলের তোড়ে ভেসে যান সকলে। সকলেরই বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে। ভেসে যাওয়া ছ’জনের মধ্যে এক জন কিছু ক্ষণের মধ্যেই সাঁতরে পাড়ে উঠে আসেন। স্থানীয়রা ঝাঁপিয়ে পড়ে আরও দু’জনকে উদ্ধার করেন। কিন্তু বাকি তিন জনের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বিপর্যয় মোকাবিলা দল সন্তোষ শঙ্কর নামে এক জনের দেহ উদ্ধার করে। বাকি দু’জনের সন্ধানে তল্লাশি জারি রয়েছে।
এর পরই নদীতে নামে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। নামে একাধিক নজরদারি নৌকাও। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নিখোঁজ তিন জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, বান আসছে জেনেও ওই যুবকরা ঘাটের বিপজ্জনক অংশে বসে নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। মাইকে ঘোষণাও কানে ঢোকেনি। স্থানীয়দের বারণও শোনা হয়নি বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জন করতে গিয়ে মালবাজারের মাল নদীতে হরপা বানের কবলে পড়েন বহু মানুষ। সেটা ছিল প্রকৃতির কোপ। কিন্তু নিমতলায় যা হল, তা অবিমৃশ্যকারিতা। মালবাজারের ওই ঘটনায় আট জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ হন বহু। পরে নিখোঁজদের উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১৩ জন আহত ব্যক্তি। তাঁদের হাতে রাজ্য সরকারের ক্ষতিপূরণের ৫০ হাজার টাকা করে তুলে দেওয়া হয়। আট জন মৃতের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হবে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।