—প্রতীকী চিত্র।
কালীপুজোর রাতে পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠল একটি ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নিউ মার্কেট থানা এলাকার শিব দে লেনে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম উত্তম সাহা, শিবম সিংহ এবং মণীশ সিংহ। তাঁদের ক্লাব একটি কালীপুজোর আয়োজন করেছিল। ধৃতদের মধ্যে এক জন পুজো কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি। এক জন প্রেসিডেন্ট। অভিযোগ, জোর করে আটকে রাখা একটি পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়াতে গেলে নিগ্রহের পাশাপাশি মারধর করা হয় পুলিশকর্মীদের। তাতে জখম হন এক মহিলা অফিসার-সহ চার জন পুলিশকর্মী। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কী ঘটেছিল? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ১টা নাগাদ ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল একটি পণ্যবাহী গাড়ি। অভিযোগ, ওই কালীপুজো কমিটির সদস্যেরা গাড়িটি আটক করে এক হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চালক সেই টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে নিগ্রহ করার পাশাপাশি গাড়ির চাবি নিয়ে নেন ক্লাবের সদস্যেরা। পুলিশ জানিয়েছে, রাত সওয়া ১টা নাগাদ নিউ মার্কেট থানার পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ অফিসার দু’পক্ষের অভিযোগ শোনার পরে গাড়ির চালক ও খালাসি-সহ পুজো কমিটির এক কর্তাকে থানায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশের গাড়িতে তুলতে যান। অভিযোগ, ওই কর্মকর্তাকে গাড়িতে তোলার পরেই পুজো কমিটির সদস্যেরা পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এমনকি, পুলিশ অফিসারকে কাজে বাধাও দেন তাঁরা। খবর পেয়ে নিউ মার্কেট থানা থেকে অফিসার-সহ বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু তাতেও পুলিশের গাড়ি আটকে রাখেন সেখানে উপস্থিত পুজো কমিটির সদস্য-সমর্থকেরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ক্লাবের সদস্যদের সরিয়ে পুলিশের গাড়ি নিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাঁরা মহিলাদের পুলিশের দিকে এগিয়ে দেন। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা পুলিশকর্মীদের বাধা দেন এবং মারধর করেন। এক পুলিশ অফিসার জানান, মহিলারা সংখ্যায় বেশি থাকায় প্রথমে বাধা পেতে হয়। তাঁরা চড়-থাপ্পড়ের পাশাপাশি পুলিশকর্মীদের রাস্তায় ফেলে মারধর করেন। তাতেই ওই মহিলা পুলিশ অফিসার, এক কনস্টেবল এবং দু’জন হোমগার্ড জখম হন। এর পরে অন্যান্য থানা থেকে বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন জনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের অভিযোগ, তার পরেও ক্লাবের অন্য সদস্যেরা থানায় এসে পুলিশকে মারধর এবং ভাঙচুরের হুমকি দেন।
ধৃত তিন জনকে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত সূত্রের খবর, এই ঘটনায় পুলিশকে মারধর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দান ও তোলাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের আর্জি জানান। অভিযুক্তদের আইনজীবী জানান, পণ্যবাহী গাড়িটি এক জনকে ধাক্কা দিয়েছিল। তারই প্রতিবাদ করেছেন ক্লাবের সদস্যেরা। আজ, মঙ্গলবার কালীপুজোর ভাসান। তাই ধৃতদের জামিনের আর্জি জানান তিনি। ধৃতদের তোলাবাজির ঘটনায় জামিন দিলেও মারধরের ঘটনায় এক দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছে আদালত।