প্রতীকী ছবি।
সল্টলেকের অতিথিশালা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষকদের বার করে দেওয়ার ঘটনায় সোমবার রাতে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম টুবাই শর্মা, সঞ্জয় সেন ওরফে দেবু ও গৌতম সাহা। মঙ্গলবার বিধাননগর আদালতে তোলা হলে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেওয়া হয় তাঁদের। ধৃতদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। একটি জামিন-অযোগ্য ধারাও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ’-এর রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রশাসনিক তৎপরতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে যে ভাবে শিক্ষকদের হেনস্থা করা হল তাতে উদ্বেগ থেকেই গেল।” মইদুল জানাচ্ছেন, ডিএল ব্লকের অতিথিশালায় মালদহ থেকে আসা শিক্ষকদের জন্য ঘর চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে জায়গা না থাকায় সিএল ব্লকের অতিথিশালায় ঘর বুক করা হয়। সেখানে তিনটি ঘর পান ওই শিক্ষকেরা। অভিযোগ, বাইরে থেকে খেয়ে ফিরে আসার পরে জানানো হয়, তাঁদের রাখা যাবে না। তার পরে সিজে ব্লকের অন্য অতিথিশালায় ঘন্টাখানেক বসিয়ে রেখে সেখানেও থাকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ধর্মীয় কারণ দেখিয়েই তাঁদের থাকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। সেই রাতেই পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করে ও পরে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ দিন ধৃতদের বিধাননগর আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী সাবির আলি তাঁদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানান। গ্রেফতারের পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তুলে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর মক্কেলদের আগে কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই। তাই তাঁদের জামিনের আবেদন করেন তিনি।
পুলিশি তদন্তে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ডিএল ব্লকের অতিথিশালার সঙ্গে যুক্ত টুবাইয়ের কাছে ঘর চেয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ঘর না থাকায় তিনি সিএল ব্লকের অতিথিশালার সঞ্জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনটি ঘরের বুকিং করেন। কিন্তু সেখানে একসঙ্গে ১০ জনের থাকা নিয়ে আপত্তি তোলেন অতিথিশালার ম্যানেজার গৌতম ও অন্য কর্মীরা।
এ দিন ডিএল ব্লকের অতিথিশালার সামনে ‘নো এনআরসি মুভমেন্ট’ সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের ডাকে করুণাময়ী মোড়ের কাছে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করা হয়। সিপিএমের বিধাননগর ২ নম্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিস সিংহ বলেন, ‘‘এমন জঘন্য ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে পথে নেমে প্রতিরোধ করা হবে। প্রশাসন ঠিক পদক্ষেপ করলে সহযোগিতা করব।’’