রাহুল সাউ
হাওড়ার গোলাবাড়ির ওড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা রাহুল সাউয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এক তরুণী-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম সোনাল সাউ, সন্দীপ সাউ এবং অভয় সাউ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই ওই যুবক খুন হয়েছেন। কিন্তু তাঁকে কী ভাবে খুন করা হল, সোমবার পর্যন্ত তা পরিষ্কার হয়নি। সে কারণে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে এ দিন আর্জি জানিয়েছিল পুলিশ। তা মঞ্জুর করে ধৃতদের ছ’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুলের বন্ধু সন্দীপ নৌবাহিনীর কর্মী। তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল শ্যামবাজারের বাসিন্দা সোনালের। নৌবাহিনীতে চাকরির সুবাদে ছ’মাস অন্তর বাড়ি আসতেন সন্দীপ। অন্য সময়ে মাঝেমধ্যেই রাহুলের মাধ্যমে সোনালের কাছে টাকা পাঠাতেন। সেই সূত্রে রাহুল ও সোনালের মধ্যেও সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জানুয়ারি মাসে রাহুলের জন্মদিনের পার্টিতে নিমন্ত্রিত ছিলেন সোনাল।
তদন্তকারীরা জানান, গত ১২ মার্চ রাহুল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার পরে আর ফেরেননি। গত শনিবার, ২০ তারিখ রাতে দক্ষিণ ২৪
পরগনার রায়চকে গঙ্গার পাড় থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রাহুল নিখোঁজ হওয়ার দিন অর্থাৎ ১২ মার্চ সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টার মধ্যে যে মহিলা তাঁদের বাড়িতে বার বার ফোন করেছিলেন, তিনিই সোনাল। এর পরেই সোমবার তাঁকে এবং সন্দীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাহুলের পরিজনেরা আরও অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের এক আত্মীয় এবং প্রতিবেশী অভয় ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে তাঁরা সন্দেহ করছেন। তার ভিত্তিতে ধরা হয় অভয়কে।
তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোনাল অবশ্য রাহুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তাঁকে একাধিক বার প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। সেই কারণেই রাহুল আত্মহত্যা করেছেন। তাঁকে খুন করা হয়নি। যদিও সোনালের ওই দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একই সঙ্গে কী ভাবে ওই যুবকের দেহ রায়চকে গঙ্গার ধারে এল, তা-ও দেখা হচ্ছে।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ত্রিকোণ প্রেমের জেরে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। তবে এটি খুন না আত্মহত্যা, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই তা নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাবে। সেই মতো তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’’