21st July TMC Rally

21st July TMC Rally: একুশের শহরে স্কেটিং করে অফিসে

ওই যুবককে দাঁড় করাতেই একগাল হেসে জানালেন, ২১ জুলাই রাস্তায় যে গাড়ি কম থাকবে আর যানজট হতে পারে, সেই আশঙ্কা তিনি করেছিলেন।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ০৫:৫৯
Share:

স্কেটিং করে অফিসের পথে জিনাগা রাহুল। বৃহস্পতিবার, উল্টোডাঙায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

একুশের সমাবেশের সকালে তখন উল্টোডাঙা মোড়ে অফিসযাত্রীদের ভিড়। সকলেই বাসের অপেক্ষায়। এ দিন পথে নামমাত্র বাস চলায় বেশ কিছু ক্ষণ পর পর যে বাস আসছিল, তাতেই ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন যাত্রীরা। এরই মধ্যে দেখা গেল, ছিপছিপে চেহারার এক যুবক চাকা লাগানো জুতো পরে তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছেন। পরনে টি-শার্ট আর জিন্স, মাথায় টুপি। এমন দৃশ্য দেখে তখন হতবাক বাসস্টপে দাঁড়ানো লোকজনও।

Advertisement

ওই যুবককে দাঁড় করাতেই একগাল হেসে জানালেন, ২১ জুলাই রাস্তায় যে গাড়ি কম থাকবে আর যানজট হতে পারে, সেই আশঙ্কা তিনি করেছিলেন। তাই আর ঝুঁকি নেননি, রোলার স্কেট জুতো পরে অফিসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বিধাননগর রোড স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে ব্যাগ থেকে ওই জুতো বার করে পরে নিয়েছেন। গন্তব্য সল্টলেক সেক্টর ফাইভের অফিস।

আদতে দক্ষিণ ভারতীয়, ২২ বছরের ওই যুবক জিনাগা রাহুল এই রাজ্যে রয়েছেন ছোট থেকে। বাড়ি শ্যামনগরে। জিনাগা বলেন, ‘‘২১ জুলাই রাস্তার কী অবস্থা হয়, খুব ভাল করে জানি। তাই অফিস যাওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তখনই মনে হল, আমি তো ভাল স্কেটিং করতে পারি। শ্যামনগর থেকে উল্টোডাঙা ট্রেনে এসে বাকি পথটা স্কেটিং করে গেলে কেমন হয়?’’ যেমন ভাবা, কেমন কাজ। সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গোছানোর সময়ে চাকা লাগানো জুতো ভরে নেন তিনি। জিনাগার কথায়, ‘‘স্কেটিং আমার নেশা। ছুটিতে মাইলের পর মাইল স্কেটিং করি। হাঁটার মতোই আত্মবিশ্বাস রয়েছে স্কেটিংয়ে।’’

Advertisement

ওই যুবককে ঘিরে তত ক্ষণে ভিড় জমেছে কিছু উৎসাহীর। জিনাগা জানালেন, তিনি প্রথমে সাইকেলে অফিস আসার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু শ্যামনগর থেকে এতটা দূরত্ব সাইকেলে আসতে সময় লাগবে অনেক। দ্বিতীয়ত, ট্রেনে সাইকেল আনা যাবে না। সে সব ভেবে আর ওই পথে আসেননি। ওই যুবক আরও জানান, স্কেটিং করে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে যাওয়া যায়। কিন্তু তিনি শহরের রাস্তায় এত জোরে যান না। দেখালেন, তাঁর টুপির পিছনে একটি ছোট আলো লাগানো। রাতে তিনি যখন স্কেটিং করেন, তখন ওই আলো দেখে অন্যেরা যাতে বুঝতে পারেন, সে জন্যই এমন ব্যবস্থা।

ওই যুবকের সঙ্গে অপেক্ষমাণ জনতার কথার ফাঁকে এসে দাঁড়াল সেক্টর ফাইভমুখী বাস। মুহূর্তে শুরু হল হুড়োহুড়ি। তত ক্ষণে মুচকি হেসে ফের স্কেটিং শুরু করে দিয়েছেন জিনাগা। বাস ছাড়ার আগেই চোখের আড়াল হয়ে গেলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement