মাত্র দেড় মাসে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত ১৯০০

কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, চলতি মরসুমে ডেঙ্গিতে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে আজ, বৃহস্পতিবার প্রতিটি বরোর এগজিকিউটিভ হেল্থ অফিসারদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করবেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬০২। অক্টোবরের শেষে তা বেড়ে হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি। অর্থাৎ মাস দেড়েকের ব্যবধানে নতুন করে আরও ১৯০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গিতে। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া ওই হিসেবে অনুযায়ী এটা স্পষ্ট যে, শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, চলতি মরসুমে ডেঙ্গিতে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে আজ, বৃহস্পতিবার প্রতিটি বরোর এগজিকিউটিভ হেল্থ অফিসারদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করবেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। সেখানে হাজির থাকবেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং পুর স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আগামী বছর পুর ভোট। সে কথা মাথায় রেখে ডেঙ্গি পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, তা দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

পুরসভার দাবি, সব থেকে বেশি ডেঙ্গি সংক্রমণের খবর এসেছে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। এর মধ্যেই সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। পাশের ওয়ার্ড ১৩২ নম্বরেও বাড়ছে ডেঙ্গি। যদিও গত দেড় মাসে নতুন করে ১৯০০ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের কারণ যে ১৩১ এবং ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডই শুধু নয়, এ কথা মানছেন পুর আধিকারিকদের একটি অংশ। তাঁদের মতে, এই বৃদ্ধির কারণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ এবং তার বিশ্লেষণ করা জরুরি। না হলে সমস্যার গভীরে পৌঁছনো সম্ভব নয়।

Advertisement

এ দিন ডেপুটি মেয়র অতীনবাবু বেহালার ওই দু’টি ওয়ার্ডে গিয়ে সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি পুরসভার বিশেষ দল নিয়ে মশা দমনের অভিযানও চালান। ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা তৃণমূলনেত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনও করেন। পরে অতীনবাবু বলেন, ‘‘পুজোর মরসুমে ডেঙ্গি বেড়েছে। সে সময়ে পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র খোলা থাকলেও প্রচারের অভাবে অনেকেই সেখানে যাননি। দ্বিতীয়ত, মণ্ডপের বাঁশে জমা জলে ডেঙ্গি মশা বেড়েছে। পুজো কমিটিগুলিকে বারবার বলেও কাজ হয়নি।’’

অতীনবাবুর যুক্তি, ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ফাঁকা জমিতে জঞ্জাল ফেলার ধারাবাহিক প্রবণতা রোখা যাচ্ছে না। পাশাপাশি নির্মীয়মাণ বাড়ি এবং বদ্ধ জলাশয়ে ডেঙ্গির মশা বেড়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এক বছর ধরে অন্যত্র থাকছেন। তাই ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ ব্যাহত হয়েছে।’’ অথচ মাস কয়েক আগে সেখানে পুরসভার ডেঙ্গি প্রতিরোধের দল কাজও করেছিল। ফাঁকা জমি বা জলাশয়ের মালিককে সতর্ক করতে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছে পুর প্রশাসন। এ নিয়ে সরকারকে চিঠি দেওয়া হবে। অন্যথায়, ওই এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধ কঠিন বলে জানান অতীনবাবু।

পুরসভা সূত্রের খবর, ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে ১০ নম্বর বরো এলাকাতেও। বুধবার মেয়র জানান, যেখান থেকে ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির খবর আসছে সেখানে যেতে বলা হয়েছে পুরকর্তাদের। কেন বাড়ছে, কোথায় গলদ তা জানার পাশাপাশি স্থানীয়দের নিয়ে সচেতনতা প্রচারের নির্দেশ দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement