—প্রতীকী চিত্র।
নেশার ঘোরে নির্মীয়মাণ বহুতলের উপর থেকে পড়ে মৃত্যু, না কি পরিকল্পনা মাফিক ‘খুন’? গল্ফ গ্রিনে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এ নিয়ে ধন্দে পুলিশ। তবে মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম অয়ন চট্টোপাধ্যায় ওরফে সানি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত অয়ন নির্মীয়মাণ ওই বহুতলে কেয়ারটেকারের কাজ করত। মৃত যুবকের নাম চিরঞ্জিত দত্ত। তিনি সেখানে জিনিসপত্র সরবরাহ করতেন। সেই সূত্রে চিরঞ্জিতের ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিল। পুলিশ জেনেছে, বৃহস্পতিবার রাতে অয়নই চিরঞ্জিতকে ডেকে এনেছিল সেখানে। এমনকি, ওই রাতে তাঁদের দু’জনকে বাইকে ঘুরতেও দেখা যায় বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। যদিও পুলিশি জেরায় অয়ন দাবি করেছে, ঘটনার রাতে বহুতলের একটি জানলার পাশে শুয়ে ছিলেন তাঁরা। রাতে ঘুমের ঘোরে জানলা থেকে শৌচকর্ম করতে গিয়ে নীচে পড়ে যান চিরঞ্জিত। যদিও তাঁর পোশাক কেন অবিন্যস্ত অবস্থায় দূরে পাওয়া গেল, কেনই বা মোবাইল ফোনের হদিস মিলল না— সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি ধৃত। শুক্রবার রাতেই ধৃতকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হয়। সেখানে ধৃতের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
শুক্রবার সকালে গল্ফ গ্রিনের বিজয়গড়ে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের নীচ থেকে চিরঞ্জিতের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত অবস্থায় ছিল। মাথায় ছিল আঘাতের চিহ্ন। আঘাত ছিল চোয়ালেও। প্রাথমিক ভাবে উপর থেকে পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হলেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে পুলিশের মনে। মৃতের পরিবারের তরফেও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর পরেই অয়নকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ১ জুলাই পর্যন্ত তার পুলিশি হেফাজত হয়েছে।
ঘটনার দিন যে ওই বাড়িতে মদ্যপানের আসর বসেছিল, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। তবে সেই আসরে বচসা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে অয়নের সঙ্গে চিরঞ্জিতের পুরনো কোনও শক্রতা ছিল কি না, তা-ও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগে অয়নের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তদন্তে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’