Narendra Modi

শ্যামাপ্রসাদ-নামে ক্ষোভ বাড়ছে, নিস্পৃহ তৃণমূল

তৃণমূলের তরফে এ দিন অবশ্য আর শ্যামাপ্রসাদ-বিতর্কে কেউ মুখ খোলেননি। ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

পোর্ট ট্রাস্টের দফতরের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা বন্দরের নামকরণ ঘিরে বিতর্ক আরও ঘোরালো হল। কলকাতায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কী ভাবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামের উপরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে চাপিয়ে দিয়ে গেলেন, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হল বাম ও কংগ্রেস। শুরু হল বিক্ষোভও।

Advertisement

বন্দরের অধীনে নেতাজি সুভাষ ডক আছে অনেক দিন থেকেই। মোদীর ঘোষণার ফলে গোটা বন্দরের নাম এখন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর। এই প্রসঙ্গ এনে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী সোমবার দাবি করেন, ‘‘বিজেপি সরকার যেখানে যেমন খুশি নাম বদলাচ্ছে। নেতাজি সুভাষের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হল শ্যামাপ্রসাদের নাম! বাংলার যে ইতিহাস ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে সমৃদ্ধ, সেখানে প্রথম জন বিপ্লবী। আর দ্বিতীয় জন ঔপনিবেশিক শাসকের সহায়ক, বাংলা ভাগের উদগাতা। এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না! অবিলম্বে এই নামকরণ প্রত্যাহার করতে হবে।’’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ভারতীয় যুবকদের অন্তর্ভুক্তিতে সাহায্য করা বা মুসলিম লিগের সঙ্গে বাংলায় মন্ত্রিসভা গঠনের প্রসঙ্গ তুলে শ্যামাপ্রসাদের নামে বন্দরের নামকরণের তীব্র বিরোধিতা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। সেই সঙ্গেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের প্রশ্ন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে রাজ্য সরকারের কোনও মতামত কি কেন্দ্র নিয়েছিল? যদি না নিয়ে থাকে, রাজ্য সরকার কেন অবস্থান পরিষ্কার করছে না? কেন তারা জানাচ্ছে না যে, এই সিদ্ধান্তের তারা বিরোধিতা করছে?’’

তৃণমূলের তরফে এ দিন অবশ্য আর শ্যামাপ্রসাদ-বিতর্কে কেউ মুখ খোলেননি। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, বন্দর কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের আওতায়। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের পছন্দমতো নামকরণ করেছে। এখানে রাজ্যের কোনও ভূমিকা নেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে উদাত্ত কণ্ঠে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শ্যামাপ্রসাদ পশ্চিমবঙ্গের জনক। স্বাধীন ভারতের প্রথম রাজনৈতিক শহিদ তিনি। এ দেশের অখণ্ডতা ও সংহতির জন্য প্রাণ বলিদান করেছিলেন। কলকাতা বন্দরের নাম শ্যামাপ্রসাদের নামে রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অজস্র ধন্যবাদ।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কাগজ দেখাব না: সোশ্যাল মিডিয়ায় দাপট বিশিষ্টদের ভিডিয়ো বার্তার

দিলীপবাবুদের এই যুক্তির বিরোধিতা করে এবং নামকরণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে এ দিন ছাত্র পরিষদের কলকাতা জেলা সভাপতি অর্ঘ্য গণের নেতৃত্বে কংগ্রেসের ছাত্র ও যুবরা কলকাতায় পোর্ট ট্রাস্টের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পোড়ানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল। স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে শ্যামাপ্রসাদের ভূমিকা ‘অগৌরবজনক’ বলে আখ্যা দিয়ে বন্দরের নামকরণের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্যও।

এই বিতর্কে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেছেন সুজনবাবু। অভিষেক মন্তব্য করেছিলেন, বাংলার অন্যতম ‘অগ্রণী কিংবদন্তি’ শ্যামাপ্রসাদের নামে বন্দরের নাম দেওয়ার সিদ্ধান্তে মোদীর সঙ্গে বাংলার ভিন্নমত নেই। সেই সূত্রেই সুজনবাবুর প্রশ্ন, ‘‘বাংলার সম্পর্কে এমন অর্বাচীন কথা বলার অধিকার ওঁকে কে দিল? মোদীকে খুশি করার জন্য এ সব বলছেন? মুখ্যমন্ত্রীর উচিত পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া উনিও এমনটাই মনে করেন কি না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement