মধ্যপ্রদেশের খণ্ডওয়া থেকে সেই আব্দুল রাকিব কুরেশিকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। প্রতীকী ছবি।
মাথারও ‘মাথা’ আছে এবং রয়েছে ‘মাথা’র কোনও না কোনও মগজ ধোলাইকারীও। হাওড়ার সাদ্দাম মল্লিক পশ্চিমবঙ্গে ‘আইএস মডিউল’-এর মাথা বলে গোয়েন্দাদের দাবি। তার মগজ যে ‘ধোলাই’ করেছিল, মধ্যপ্রদেশের খণ্ডওয়া থেকে সেই আব্দুল রাকিব কুরেশিকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, জেরার মুখে সাদ্দাম এবং তার সঙ্গে ধৃত সইদ আহমেদ জানিয়েছে, সিরিয়ায় কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে জঙ্গি সংগঠন আইএস। এ রাজ্য থেকে সেখানকার জেহাদিদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল তারা। এখান থেকে টাকা তুলে তা সিরিয়ায় পাঠানোরও ছক কষেছিল ওই দু’জন।
এসটিএফের আরও দাবি, সাদ্দাম-সইদ জানিয়েছে, সিরিয়ার জন্য তারা এ রাজ্যের জেহাদি কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ যুবকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ শুরু করেছিল। তাদের জেরা করেই সোমবার বিকেলে মধ্যপ্রদেশের খণ্ডওয়া থেকে কুরেশিকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। তার কাছে মোবাইল, পেন ড্রাইভ এবং বিভিন্ন তথ্য-সহ নথি পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশি সূত্রের খবর। আইএস জঙ্গি চক্রের অন্যতম চাঁই সন্দেহে ধৃত কুরেশিকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে আজ, বুধবার কলকাতায় এনে আদালতে তোলা হতে পারে।
এসটিএফের দাবি, সাদ্দামের সঙ্গে সঙ্গে সইদেরও মগজ ধোলাই করেছিল কুরেশি। বেশ কয়েকটি টেলিগ্রাম চ্যানেলের সদস্য ছিল ওই তিন জন। সেখানেই নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে কথা হত। সাদ্দাম-সইদকে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল সরবরাহ করার কথা ছিল কুরেশির। পুলিশ জানায়, বছর দেড়েক আগে সমাজমাধ্যমে কুরেশির সঙ্গে সাদ্দামের আলাপ হয়। তার পর থেকে মূলত সমাজমাধ্যম মারফত কথাবার্তা চলতে থাকে তাদের। সাদ্দামের গোপন চ্যাট থেকে কুরেশির কথা জানতে পারে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, কুরেশি প্রাক্তন সিমি নেতা। খণ্ডওয়ায় তার বিরুদ্ধে ইউএপিএ-সহ বিভিন্ন আইন ও ধারায় অন্তত তিনটি মামলা আছে। দু’টি মামলায় সে জেল খেটেছে। বছর দুই আগে একটি মামলায় জামিন পেয়েই কুরেশি সিমি ছেড়ে আইএসে যোগ দেয় বলে পুলিশের দাবি। এক তদন্তকারী জানান, কুরেশির ভাইও সিমি-র সদস্য। সাদ্দামের সঙ্গে কুরেশির যোগাযোগ থাকলেও সে কখনও পশ্চিমবঙ্গে আসেনি।
তদন্তকারীরা জানান, সাদ্দাম-সইদ ছাড়াও রাজ্যে আইএস মডিউলের আরও পাঁচ-ছ’জন সদস্য রয়েছে। উত্তর ভারত, ঝাড়খণ্ডের বোকারো, নয়ডায় যাতায়াত ছিল সাদ্দামের।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, দু’জনকে খুনের ছক কষেছিল সাদ্দামদের। তবে সেই দু’ব্যক্তি বাংলার বাসিন্দা নন। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাঁদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। পুলিশের দাবি, ওই দু’জনকে খুনের জন্যই অস্ত্র জোগাড়ের চেষ্টা করছিল সাদ্দাম ও সইদ। তার মধ্যেই শুক্রবার বিদ্যাসাগর সেতুতে ধরা পড়ে তারা।