আরজি করের নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশের অভিযোগে ২৫টি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করল পুলিশ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশের অভিযোগে সমাজমাধ্যম থেকে ২৫টি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করেছে কলকাতা পুলিশ। ওই অ্যাকাউন্টের মালিকদের লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সেই মর্মে নোটিসও দেওয়া হয়েছে তাঁদের। পুলিশ সূত্রে খবর, লালবাজারের নজরে রয়েছে কয়েকটি বিদেশি অ্যাকাউন্টও। মূলত বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের কিছু সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে আরজি করের নির্যাতিতার ছবি বা নাম প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই দুই দেশের আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে পোস্টগুলি করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ওই অ্যাকাউন্টগুলিকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে।
লালবাজার সূত্রে খবর, ২৫টি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা ছাড়াও সমাজমাধ্যম থেকে ইতিমধ্যে সাড়ে চার হাজারের বেশি পোস্ট মুছিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতিতার নাম বা ছবি প্রকাশ করে ওই পোস্টগুলি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ধর্ষণের কোনও ঘটনায় নির্যাতিতার নাম, ছবি কিংবা পরিচয়প্রকাশ আইনবিরুদ্ধ। তবে আরজি কর-কাণ্ডের পর নির্যাতিতা চিকিৎসকের নাম এবং ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। বহু মানুষ তা শেয়ারও করেছিলেন। এমনকি, কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। সেই সংক্রান্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টে বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি চলাকালীন নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও। সমাজমাধ্যমের সংস্থাগুলিকে ছবি এবং নাম সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
কলকাতা পুলিশও প্রথম থেকে নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে এসেছে। একাধিক পোস্টে সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে লালবাজারের তরফে। তা সত্ত্বেও যাঁরা আইনবিরুদ্ধ ভাবে নির্যাতিতার নাম এবং ছবি ছড়িয়ে দিয়েছেন, তেমন ২৫টি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ওই ২৫ জনের কাছেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, কয়েকটি অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে মূল মালিক কে, তা চিহ্নিত করা বা তাঁর ঠিকানা জোগাড় করা যায়নি। সে ক্ষেত্রে ওই অ্যাকাউন্টেই নোটিস পোস্ট করে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক, এক্স বা ইনস্টাগ্রামের মতো সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে কলকাতা পুলিশ। অ্যাকাউন্টের ব্যবহারকারীর পরিচয় সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে এবং আরও তথ্য জোগাড় করতে কর্তৃপক্ষের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।