Horse Training

পুলিশের প্রশিক্ষণে গেল শান্ত ছয় ঘোড়া, বাদ ‘দুষ্টুরা’

কলকাতা পুলিশের প্রায় ৩৫০ জন সার্জেন্ট ও সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকদের প্রশিক্ষণে ওই ছ’টি ঘোড়াই ব্যবহার করা হবে। সদ্য নিযুক্ত আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ চলাকালীন বিপদের আশঙ্কা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

কেউ রীতিমতো বদমেজাজি। কারও বিরুদ্ধে আবার রয়েছে মর্জিমাফিক মেজাজ বদলানোর ‘অভিযোগ’। কেউ এত বছর পরেও কয়েক জন ছাড়া কারও কাছে বশ্যতা স্বীকারে নারাজ। কারও মধ্যে হঠাৎ পা ছুটিয়ে অন্যকে জখম করার পুরনো ‘রোগ’ বিদ্যমান। এমন ‘দুষ্টু’ ঘোড়াদের দিয়ে পুলিশকর্মীদের ঘোড়সওয়ারির প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময়ে বিপদ এড়াতে অপেক্ষাকৃত শান্ত ছ’টি ঘোড়াকে নিয়ে যাওয়া হল আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে। কলকাতা পুলিশের প্রায় ৩৫০ জন সার্জেন্ট ও সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকদের প্রশিক্ষণে ওই ছ’টি ঘোড়াই ব্যবহার করা হবে। সদ্য নিযুক্ত আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ চলাকালীন বিপদের আশঙ্কা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে কর্মী-সঙ্কট রয়েছে কলকাতা পুলিশে। সেই সঙ্কট কাটাতেই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাওড়ায় কলকাতা পুলিশের ট্রেনিং স্কুলে শুরু হয়েছে সদ্য নিযুক্ত সার্জেন্ট ও সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ। সেই প্রশিক্ষণের অঙ্গ হিসাবে রয়েছে ঘোড়সওয়ারি। বাহিনী সূত্রের খবর, আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে এই সদ্য নিযুক্ত পুলিশকর্মীদের ঘোড়া চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেই প্রশিক্ষণ চলাকালীন কোনও রকম বিপদ যাতে না ঘটে, তাই সদর দফতর থেকে তুলনায় শান্ত ছ’টি ঘোড়াকে আলিপুরে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার এস এন ব্যানার্জি রোডের কলকাতা পুলিশের আস্তাবল থেকে শান্ত ওই ঘোড়াগুলিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বদলে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স থেকে এসেছে তিনটি ঘোড়া। সেই তিনটি ঘোড়াকে আপাতত অন্যান্য ঘোড়াদের সঙ্গে ময়দান চত্বরে নজরদারির কাজে লাগানো হবে বলে জানা গিয়েছে।

কলকাতা পুলিশের ঘোড়সওয়ারি বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বাহিনীতে থাকা সব ঘোড়ার মেজাজ সমান নয়। প্রশিক্ষণের পরেও সকলের পক্ষে সব ঘোড়াদের নিয়ন্ত্রণ করাও সব সময়ে সম্ভব হয় না। ঘোড়া চালানোয় দক্ষ না হলে নিয়ন্ত্রণ রাখাও মুশকিল। এক কর্তার কথায়, ‘‘ঘোড়া চালানো তো গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসার মতো সহজ নয়। ঘোড়ার মেজাজকে সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। সদ্য প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া কারও পক্ষে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। উল্টে প্রশিক্ষণ নিতে এসে কেউ যদি এমন বদমেজাজি ঘোড়ার পাল্লায় পড়ে আহত হন, সে ক্ষেত্রে অন্যান্য পুলিশকর্মীরাও ভয় পেয়ে যাবেন। শান্ত ঘোড়া হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা অনেকটা কম থাকে।’’

Advertisement

যদিও কলকাতা পুলিশের পশু চিকিৎসক সুরজিৎ বসু জানাচ্ছেন, প্রশিক্ষিত ঘোড়াদের এক এক জনের এক এক রকম মেজাজ হওয়াই স্বাভাবিক। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিটি মানুষ যেমন ভিন্ন ভিন্ন হয়, ঘোড়ারাও তেমন। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরেও অনেক ক্ষেত্রে ঘোড়ার মেজাজের বিশেষ পরিবর্তন হয় না। তবে এই ছ’টি ঘোড়ার বদমেজাজি হওয়ার কোনও পূর্ব ঘটনা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement