পঞ্চসায়রের সেই হোম।
পঞ্চসায়রের তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার ৫৩ দিনের মাথায় অভিযুক্ত ট্যাক্সিচালক উত্তম রাম এবং বছর সতেরোর নাবালকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার নাবালকের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে। উত্তমের বিরুদ্ধে চার্জশিটটি জমা পড়ে আলিপুর এসিজেএম আদালতে। দু’জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ডি (গণধর্ষণ), ৩৬৬ (অপহরণ) ৩২৩ (মারধর) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রায় ৩০০ পাতার ওই চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে রয়েছে প্রায় ৫০ জনের নাম।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল এবং তার আশপাশের শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, নির্যাতিতার মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট, ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টের পাশাপাশি আদালতে তরুণীর দেওয়া গোপন জবানবন্দি এবং অভিযুক্তদের টিআই প্যারেডের উপরে ভিত্তি করে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। ঘটনায় এক অভিযুক্ত নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের নির্দেশে তার সাইকোমেট্রি পরীক্ষা হয়েছিল। সেই রিপোর্টও জমা পড়েছে বোর্ডের কাছে। তবে এ দিন দু’টি পৃথক চার্জশিট জমা পড়লেও নাবালকের বিচার চাইল্ড কোর্টে হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত কিশোরের মানসিক বিকাশ সাবালকের মতো কি না এবং তার বিচার চাইল্ড কোর্টেই হবে কি না, চার্জশিট এবং সাইকোমেট্রি পরীক্ষার রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সেই সিদ্ধান্ত নেবে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড।
মানসিক ভাবে অসুস্থ এবং মৃগী রোগী ওই তরুণী গত ১১ নভেন্বর রাতে পঞ্চসায়র থানা এলাকার একটি হোম থেকে নিখোঁজ হন। পরের দিন ভোরে বারুইপুরের গঙ্গাজোয়ারার কাছে একটি মাঠ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পঞ্চসায়র থানা। নির্যাতিতা তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতে ১৬ নভেম্বর কাটিপোতা থেকে ধরা হয় ট্যাক্সিচালক উত্তমকে। তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছিল বছর সতেরোর এক কিশোরও। উত্তমের বয়ানের ভিত্তিতে ২০ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এই মামলার তদন্তভার পঞ্চসায়র থানার হাত থেকে যায় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে।
অভিযুক্ত নাবালকের বিচার কোথায় হবে, তা জানতে পুলিশকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আগামী ৮ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে বোর্ড।