এ বার পশ্চিমবঙ্গও!
নতুন দু’হাজারের নোটে লক্ষাধিক টাকা সমেত কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়ল সাত জন। ধৃতদের অন্যতম মণীশ শর্মা (জোশী) এ বার বিধানসভা ভোটে রানিগঞ্জ থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গেই কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) জালে পড়েছে ছয় কয়লা মাফিয়া। মণীশের ধরা পড়ার ঘটনায় বিজেপি-কে বিঁধতে কসুর করেনি তৃণমূল। রাজ্য বিজেপির দাবি, মনীশকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, ‘‘গোটা চক্রের সঙ্গেই বিজেপির উচ্চ নেতৃত্ব জড়িত। পুলিশ তদন্ত করলে বোমা ফেটে যাবে।’’ যা শুনে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কীসের ও কোন ব্যথায় তৃণমূলের এমন হাস্যকর অভিযোগ, তা মানুষ বুঝতে পারছেন।’’ আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য মণীশের সঙ্গে পরিচয় থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘দু’দিন আগেও মণীশ আমার সঙ্গে দেখা করতে এসএমএস করেছিল। আমি এড়িয়ে যাই। ওর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির খবর আসছিল। ওকে পদ থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়েছিল।’’
এসটিএফের দাবি, ধৃতরা কলকাতায় অস্ত্র কিনতে এসেছিলেন। মণীশ ছাড়া বাকি ছ’জনের নাম: রাজেশ ঝা ওরফে রাজু, লোকেশ সিংহ, সায়ন মজুমদার, কৃষ্ণমুরারী কয়াল ওরফে বিল্লু, শুভম ভৌমিক এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় ওরফে গৌতম। সকলেই বর্ধমানের কয়লা মাফিয়া হিসাবে পরিচিত। গোয়েন্দারা জানান, রাজু চলতি জুনে জাল নোট পাচার এবং জুলাইয়ে একটি খুনের মামলায় ধরা পড়ে। পরে জামিন পায়। লোকেশের ট্রাকের ব্যবসা। দুর্গাপুরের লাইদোহায় একটি খুনের সঙ্গে সে ও পার্থ জড়িত বলে পুলিশের দাবি। ওই মামলায় পার্থর খোঁজ চলছিল।
লালবাজার সূত্রে দাবি, সোমবার উল্টোডাঙা থেকে মণীশ, রাজু-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। মঙ্গলবার ভোর ৪টে নাগাদ শুভম ও পার্থকে বাগুইআটির একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, কয়েক রাউন্ড গুলি এবং ৩৩ লক্ষ নতুন টাকার নোট। এর মধ্যে ২৫ লক্ষ রয়েছে দু’হাজার টাকার নতুন নোটে। বাকিটা ১০০ ও ৫০ টাকার নোটে। পুলিশ জানিয়েছে, মনীশের কাছ থেকে ২০০০ টাকার ৫টি বান্ডিল মিলেছে। অস্ত্রগুলির মধ্যে ৩টির লাইসেন্স মিলেছে। কিন্তু সেই নথি আসল কি না, খতিয়ে দেখা হবে।
মঙ্গলবার ধৃতদের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।