গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। এই অভিযানকে কেন্দ্র করে আঁটসাঁট নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে কলকাতা, হাওড়ার বিভিন্ন অংশ। মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে জমায়েত শুরুর কথা জানিয়েছে ছাত্র সমাজ। মূলত দুটো জায়গায় জমায়েত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তার পর সেখান থেকে নবান্নের উদ্দেশে যাবেন আন্দোলনকারীরা।
সমাজমাধ্যমে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের যাত্রাপথ প্রকাশ করেছে। মূলত কলেজ স্কোয়্যার এবং সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ডে জমায়েত করার কথা বলা হয়েছে। এই দুই জায়গা থেকে মিছিল যাবে নবান্নের দিকে। কলেজ স্কোয়্যারে যে জমায়েত হবে সেই মিছিল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ধর্মতলা, ইডেন গার্ডেন্স, হেস্টিং হয়ে নবান্নে পৌঁছনোর পরিকল্পনা। অন্য মিছিলটি সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরে নবান্নের দিকে এগোবে।
‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে সায়ন লাহিড়ী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় কলকাতার কলেজ স্কোয়্যার এবং হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে হবে জমায়েত। এর পরে মিছিল যাবে নবান্নের দিকে। পুলিশ যেখানে মিছিল থামাবে, সেখানেই দাঁড়িয়ে যাওয়া হবে। তবে মঙ্গলবার কত মানুষের জমায়েত হবে, কত গাড়ি আসতে পারে সে সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন সায়ন।
মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেয়নি রাজ্য পুলিশ। জানানো হয়েছে, ওই অভিযানের জন্য প্রথমে পুলিশের কাছ থেকে কোনও অনুমতি চাওয়া না হলেও সোমবার দুপুরে দু’টি ইমেল আসে। কিন্তু তাতে বেশ কয়েকটি সমস্যা থাকায় পুলিশ নবান্ন অভিযানেরই অনুমতি দেয়নি।
নবান্ন অভিযান রুখতে তৎপর পুলিশ। কলকাতা এবং হাওড়া মিলিয়ে প্রায় ২১ হাজার পুলিশকর্মী মঙ্গলবার রাস্তায় থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। নবান্ন যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেডের দুর্গ বানানো হয়েছে। শুধু বড় রাস্তায় নয়, আলিগলিতেও ব্যারিকেড করা হয়েছে। সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, ফরশোর রোড এবং লক্ষ্মীনারায়ণতলা এবং মন্দিরতলায় বড় ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। নবান্নের আশপাশে গলির মুখগুলোও ঘিরে ফেলা হচ্ছে ব্যারিকেড দিয়ে। থাকছে জলকামান এবং ড্রোনের ব্যবস্থা।
অন্য দিকে, শিয়ালদহ স্টেশনেও জমায়েত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জমায়েত মহাত্মা গান্ধী রোড ধরে কলেজ স্কোয়্যার পৌঁছতে পারে। কিছু জমায়েত মহাত্মা গান্ধী হয়ে হাওড়া সেতু ধরে নবান্ন পৌঁছনোর চেষ্টাও করতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, হাওড়া সেতুর আগেই মহাত্মা গান্ধী রোড এবং স্ট্র্যান্ড রোডের সংযোগস্থলে এই মিছিলটি আটকানো হবে। তার জন্য সেখানে থাকছে লোহার গার্ডরেল এবং সিজ়ার ব্যারিকেড। হাওড়া সেতুতে ওঠার ঠিক মুখে রাখা হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের ব্যারিকেড এবং কাঠের গুঁড়ি।
নবান্ন অভিযানের জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রাস্তায় বাস, অটোর মতো যান চলছে খুবই কম। রাস্তায় বেরিয়ে দুর্ভোগের মুখে পড়ছেন অফিসযাত্রীরা। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অনেক ক্ষণ। যে সব বাস চলছে, তাতে ভিড়ে ঠাসাঠাসি। অনেকেই বাস পথ ছেড়ে মেট্রো ধরছেন। তবে গন্তব্যে পৌঁছতে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই।