বিস্ফোরণের পরে খাগড়াগড়ের সেই ঘর। ফাইল চিত্র
এ তল্লাটের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের পুরনো সম্পর্ক জঙ্গি-যোগের দৌলতে। মুর্শিদাবাদে আল-কায়দা জঙ্গি সন্দেহে ছ’জন ধরা পড়ার পরে, ফের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) রেডারে পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়।
২০১৪-র ২ অক্টোবর খাগড়াগড়ে এক বিস্ফোরণে দু’জন মারা যায়। তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদ, বীরভূম-সহ নানা জেলায় জামাত-উল-মুজাহিদিন (বাংলাদেশ)-এর জঙ্গি-জালের হদিস পায় এনআইএ। রবিবার এনআইএ-র এক কর্তার দাবি, ‘‘খাগড়াগড়কে ঘিরে জেএমবি মডিউল (শাখা) তৈরি করেছিল। তা মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিল। মুর্শিদাবাদ থেকেই আল কায়দা জঙ্গিদের সন্ধান মিলেছে। বর্ধমান-বীরভূমেও আল কায়দা কোনও ভূমিকা নিচ্ছিল কি না, দেখা হবে। খাগড়াগড়-কাণ্ডে জড়িতদের সঙ্গে আল কায়দার যোগ আছে কি না, তা খোঁজ নেওয়া হবে।’’
ছ’বছর আগে সে বিস্ফোরণের পরে, আপাত ছাপোষা দেখতে লোকগুলোর জঙ্গি-যোগের কথা জেনে চমকে গিয়েছিলেন খাগড়াগড়ের অনেকে। মুর্শিদাবাদ-কাণ্ড সে স্মৃতি উস্কে দিয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক খাগড়াগড়ের ওই পাড়ার একাধিক বাসিন্দা এ দিন বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের ছেলেগুলোর ছবি দেখে মনে পড়ছে, এখানেও কেমন নির্বিরোধী ভাবে থাকত জঙ্গিরা। দেখে সন্দেহ হত না!’’ খাগড়াগড়-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল মঙ্গলকোটের শিমুলিয়ার এক মাদ্রাসারও। সেটি এখন খণ্ডহর। সেখানকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার আগে জেএমবি-র নাম জানতাম না। এখন আবার আল কায়দার নাম শুনছি!’’
খাগড়াগড়-কাণ্ডে ৩২ জনকে ধরে এনআইএ। তিন পর্যায়ে ৩১ জনের সাজা হয়েছে। যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেটি এখনও এনআইএ-র হেফাজতে রয়েছে। বাড়ি ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন মালিক নুরুল হাসান চৌধুরী। তাঁর ছেলে আসরাফ আলি চৌধুরী বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি না হলে, হয়তো এত দিনে বাড়ি ফেরত পেতাম।’’
খাগড়াগড়ের সামিরুল ইসলাম, শিমুলিয়ার সিরাজ শেখদের আক্ষেপ, ‘‘কোথাও কোনও জঙ্গি ধরা পড়লেই সে প্রসঙ্গে খাগড়াগড় বা শিমুলিয়ার নাম ওঠে। এই এলাকা থেকে যাঁরা ভিন্ রাজ্যে কাজের জন্য যান, কর্মক্ষেত্রে তাঁদেরও সমস্যা হয়। খারাপ লাগে।’’