মোবাইলে রায় শুনছেন সাজাপ্রাপ্ত হবিবুর রহমানের পরিজন। ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী
পাঁচ বছর আগে দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল পাড়া। বর্ধমানের খাগড়াগড়ের যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেই থেকে সেই বাড়ি এনআইএ-র কব্জায়। শুক্রবার মামলার প্রথম দফার সাজা ঘোষণার খানিক আগে টিভির পর্দায় চোখ রেখে ওই বাড়ির বৃদ্ধ মালিক বললেন, ‘‘আমাদের যা মানসিক ও সামাজিক কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে, ওদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি হয়।’’
বছর আটাত্তরের ওই বৃদ্ধ হাসান চৌধুরী থাকেন বিস্ফোরণ ঘটা বাড়ির উল্টো দিকেই। তাঁর আশা, এ বার হয়তো সেই বাড়ি ফেরত পাবেন। হাসান বলেন, ‘‘বয়স হচ্ছে। ভয় পাচ্ছি, আর কোনও ক্ষতি যেন না হয়। বাড়ি থেকেও বেরোই না।’’ ২০১৪-র ২ অক্টোবরের সেই ঘটনার বিবরণ দেওয়ার ফাঁকে হাসানের ছেলে আসরাফ আলি চৌধুরী বলেন, ‘‘এখনও একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছি। এটা থেকে বেরোতে চাই।’’
বিস্ফোরণে নিহত শাকিল গাজি, সুবহান মণ্ডলেরা ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। তাদের সঙ্গে থাকত শুক্রবার সাজাপ্রাপ্ত গুলসোনা বিবি, আলিমা বিবি ও আবুল হাকিম। ওই পাড়ার বাসিন্দা ফতেমা বিবি, শাকাহুর বেগমেরা বলেন, “বাড়ির ভিতরে কী চলছে, আমরা কোনও দিনই জানতে পারিনি। দুই মহিলাও সব সময় বোরখা পরে থাকত। ছাদে উঠলেও ওদের মুখ দেখতে পাইনি আমরা। বিস্ফোরণের পরে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে দেখতে পাই।’’
এ দিন ১৯ জনের সাজা ঘোষণার পরেও অবশ্য এলাকার অনেকে ওই ঘটনা নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সাহেবা বিবি, রাজা শেখরা বলেন, ‘‘কী ভয়াবহ দিন গিয়েছে, বলে বোঝানো যাবে না! ওই সব দিন আমরা ভুলে যেতে চাই।’’ তবে মমতাজ বেগম, সরস্বতী মালির মতো কয়েক জনের দাবি, আরও বেশি সাজা হলে ভাল হত।