আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ আর চাপানউতোর— রাজ্যের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে চলছে শুধু এই। ফলে লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে ক্রমশ বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। পরিস্থিতি প্রশমিত করতে এ বার সক্রিয় হলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। আলোচনায় ডাকলেন রাজ্যের চারটি বড় রাজনৈতিক দলকে। নির্বাচন পরবর্তী হিংসা কী ভাবে থামানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা করতেই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র— এই চার জনকে বুধবার চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। আলোচনায় বসার জন্য তাঁদের বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় রাজভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
রাজ্যপালের প্রেস সচিব মানব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার যে সব খবর আসছে, তার প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল চারটি বড় রাজনৈতিক দলের একটি বৈঠক ডেকেছেন, যা নাগরিকদের স্বার্থে রাজ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বহাল রাখতে কাজে আসবে।’’
আরও পড়ুন: চিকিৎসা না পেয়ে কারও মৃত্যু হলে দায় কার: অভিষেক, রাজ্যের কী পরিস্থিতি ভাবুন: দিলীপ
নির্বাচনের আগে থেকেই রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট উত্তপ্ত ছিল বাংলা। নির্বাচন চলাকালীনও তাতে ছেদ পড়েনি। আর নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরে বাংলার নানা প্রান্ত থেকে হিংসাত্মক সংঘর্ষ এবং একের পর এক খুনের খবর আসছে। মূলত তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যেই ঘটছে এই সঙ্ঘাত। রাজ্যপাল অবশ্য শুধু তৃণমূল আর বিজেপি-কে নিয়ে আলোচনায় বসছেন না। বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে সিপিএম এবং কংগ্রেসেরও এই বৈঠকে থাকা উচিত বলে রাজ্যপাল মনে করছেন।
কয়েক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি বাংলায় ঠিক কেমন, তা নিয়ে বিশদে কথা হয়েছে বলে খবর। রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে এই প্রশ্নের মুখেও পড়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। তাঁর জবাব ছিল, ‘হতেও পারে’। পরিস্থিতি নিয়ে তিনি যে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন, চার দলকে বৈঠকে ডেকে তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন কেশরী।
আরও পড়ুন: বিজেপির মিছিলে জলকামান, গ্যাস, লাঠি, স্তব্ধ মধ্য কলকাতা, নেতারা বললেন রাজ্যে গণতন্ত্র নেই
তৃণমূল সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানিয়েছেন যে, রাজ্যপাল যখন আলোচনায় ডেকেছেন, তখন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা আলোচনায় যাবেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষও রাজ্যপালের আমন্ত্রণের প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির তরফ থেকে রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এবং সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহকে রাজভবনে পাঠানো হবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।