হাসপাতালের বাইরে শুয়ে প্রসূতি।
ফের কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতাল। এ বার প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি না নিয়ে তাঁকে রেফার করার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ফলে গাছতলাতেই সন্তান প্রসব করলেন তরুণী।
সূত্রের খবর, শনিবার সকালে কাটোয়ার করজগ্রামের বাসিন্দা বছর ২৬-এর অন্তঃসত্ত্বা সেলিনা বিবিকে নিয়ে আসা হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকরা তাঁকে ভর্তি না নিয়ে শুধুমাত্র পরীক্ষা করার পর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এর পরেই শুরু হয় ভোগান্তি। প্রসূতিকে নিয়ে পরিবারের লোকজন আ্যম্বুল্যান্সের জন্য হাসপাতাল চত্বরে একটি গাছতলায় অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পার হয়ে গেলেও আসেনি আ্যম্বুল্যান্স। ঘণ্টাদেড়েক পর গাছতলাতেই সন্তানের জন্ম দেন ওই তরুণী।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সেলিনার মা হামিদা বিবি জানান, তাঁর মেয়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শুক্রবার থেকে সেলিনা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাঁর রক্তক্ষরণও হচ্ছিল। তাই তাঁকে প্রথমে কাটোয়া শহরে এক স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই চিকিৎসক সেলিনাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। হামিদা বলেন, “আমার মেয়েকে দেখার পরেই ডাক্তারবাবুরা বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তার পর ওঁরা বলেন আ্যম্বুল্যান্স আসছে, অপেক্ষা করতে। আমরা হাসপাতালের সামনে গাছতলায় মেয়েকে শুইয়ে দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু অনেক ক্ষণ হয়ে গেলেও আ্যম্বুল্যান্স আসেনি। হঠাৎ মেয়ের গাছতলাতেই প্রসব হয়ে যায়।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, সন্তান জন্মানোর খবর পেয়ে হাসপাতালের কর্মীরা তাড়াতাড়ি তাঁকে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করে নেয়। বর্তমানে মা ও সদ্যোজাত সুস্থ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসূতির পরিবারের সদস্যরা কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেছেন। হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এ বিষয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শুভ্রজিৎ দে বলেন, “ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও জানানো হয়েছে। আমরা খেয়াল রাখব যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।”