নিখোঁজের অভিযোগ নেয়নি থানা, স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি কান্তির

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৯ নভেম্বর বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে রায়দিঘিতে ফিরছিলেন ১০ মৎস্যজীবী। বুলবুলের দাপটে ট্রলার ডুবে গেলে মাত্র তিনজন মৎস্যজীবী সাঁতরে পাড়ে ওঠেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মারিশদা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৫
Share:

সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।

বুলবুলের পর দশদিন কেটে গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি থেকে মাছ ধরতে বেরিয়ে বঙ্গোপসাগরে এখনও নিখোঁজ কাঁথি ৩ ব্লকের দুই মৎস্যজীবী। তাঁদের পরিবারের অভিযোগ, মারিশদা থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ নিতে অস্বীকার করেছে। বিষয়টি জানার পরে ওই দুই মৎস্যজীবীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে বুধবার লিখিত অভিযোগ জানালেন তিনি।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৯ নভেম্বর বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে রায়দিঘিতে ফিরছিলেন ১০ মৎস্যজীবী। বুলবুলের দাপটে ট্রলার ডুবে গেলে মাত্র তিনজন মৎস্যজীবী সাঁতরে পাড়ে ওঠেন। কয়েকদিন বাদে ছাইমারা দ্বীপের কাছে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু এখনও হদিস নেই বাকি চার মৎস্যজীবীর। এঁদের দু’জন কাঁথি ৩ ব্লকের শিল্লিবাড়ি গ্রামের চন্দন দাস এবং জগুদাসবাড় গ্রামের শম্ভু দাস। একাধিকবার রায়দিঘিতে গিয়ে চন্দন ও শম্ভুর খোঁজ করেছে তাঁদের পরিবারের লোকেরা। কিন্তু ওই দু’জন জীবিত না মৃত, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না প্রশাসন। চন্দনের একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে জয়দেব দাসের অভিযোগ, ‘‘মারিশদা থানায় বাবার সম্পর্কে নিখোঁজ অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।’’ একই অভিযোগ, শম্ভুর পরিবারেরও।

বুধবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার দাপুটে সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘অবিলম্বে সব মৎস্যজীবীদের পরিবারের কাছ থেকে নিখোঁজের অভিযোগ নিতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি প্রশাসনিক ভাবে ড্রোন ব্যবহারেরও অনুমতি দিতে হবে। যাতে সরকারি এবং বেসরকারি ভাবেও চার মৎস্যজীবীর সন্ধান করা যায়।’’

Advertisement

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘আশা করি মুখ্যমন্ত্রী এই চিঠির তাৎপর্য বোঝেন। সরকার নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের খোঁজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় বেসরকারি সাহায্য নিতে কান্তি গঙ্গোপাধ্যাকে বাধ্য হতে হলে মুখ্যমন্ত্রীর সম্মান বাড়বে?’’

বিজেপির জেলা সভাপতি (কাঁথি) অনুপ চক্রবর্তীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের পরিবারের দায় নিজেদের ঘাড় থেকে সরাতে চাইছে।’’ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কনিষ্ক পন্ডা বলেন, ‘‘পুলিশের প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। তবে দুই মৎস্যজীবী পরিবারের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। প্রয়োজনে আমরাই তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করব।’’

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশে দাবি, যেহেতু ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় হয়েছে, তাই এই ধরনের অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে সেখানেই করা দরকার। কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কী কারণে ওই দুই মৎস্যজীবীর পরিবারের অভিযোগ নেওয়া হয়নি, তা দেখা হচ্ছে।’’ যদিও কাঁথি মহকুমা পুলিশ সূত্রে দাবি, গত ১৩ ও ১৪ নভেম্বর দক্ষিণ ২৪ পরগনাার রায়দিঘি থানায় নিখোঁজ চন্দন ও শম্ভূর পরিবারের লোকেরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement