গ্রেফতার হয়ে ৬৭ দিন হাজতবাসের পরে জামিন পেয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির চালক অর্ণব রাও। গত ৫ জুলাই চুঁচুড়া আদালত তাঁকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়। সাজার মেয়াদ পূর্ণ করতে সোমবার ওই আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন অর্ণব।
২০১৭ সালের ৭ মার্চ সকালে কলকাতা থেকে সহশিল্পীদের নিয়ে ভাড়া গাড়িতে বীরভূমের সিউড়িতে অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছিলেন কালিকাপ্রসাদ। হুগলির গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি উল্টে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে। মারা যান কালিকাপ্রসাদ। বাকিরা আহত হন। কালিকাপ্রসাদের স্ত্রী ঋতচেতা গোস্বামী তিন দিন পরে গুড়াপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে অর্ণবের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
ওই বছরের ১৩ মার্চ অর্ণব থানায় আত্মসমর্পণ করেন। আসামি পক্ষের কৌঁসুলি দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য জানান, ৬৭ দিন জেল খাটার পরে কলকাতা হাইকোর্ট অর্ণবকে জামিন দেয়। তার আগেই আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।
গত ৫ জুলাই চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (প্রথম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) শুভেন্দু সাহা তিন মাসের কারাদণ্ড, সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিন কারাবাসের সাজা শোনান অর্ণবকে। সে দিনও তিনি জামিন পান।
সোমবার দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আর্থিক অসঙ্গতির জন্য আদালত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাজা স্থগিত করার আবেদন জানাতে পারেননি আমার মক্কেল। সেই কারণে সাজার মেয়াদ পূর্ণ করার জন্য উনি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের (প্রথম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট) এজলাসে আত্মসমর্পণ করলেন। জরিমানার পাঁচ হাজার টাকাও জমা দেওয়া হল।’’
বছর চব্বিশের অর্ণব অবিবাহিত। কসবায় মা-ছেলের সংসার। এ দিন দুই প্রতিবেশীকে নিয়ে আদালতে এসেছিলেন অর্ণবের মা করবী ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘আর ২৩টা দিন পার হলে বাঁচি। ওই দুর্ঘটনার পরে আমাদের উপরে কতটা ঝড় বয়ে গিয়েছে, বলে বোঝাতে পারব না। দুর্ঘটনায় অর্ণবও মারা যেতে পারত। তখন কাকে দোষ দিতাম! দুর্ঘটনায় ছেলে জেলে গেল। কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেল।
পেট চালাতে আমাকে ছোটখাটো কাজ করতে হয়।’’ জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে অর্ণবের ভাল কোনও কাজ জুটবে কি না, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন করবীদেবী।