গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কৈলাস বিজয়বর্গীয়র টুইটের দু’দিন পর জবাব এল তৃণমূল শিবির থেকে। তা-ও আবার মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণের জবাব দিলেন তৃণমূলের মহিলা জনপ্রতিনিধিরা। নিজেদের টুইট তাঁরা দাবি করলেন, শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, কৈলাসের টুইটে অপমানিত হয়েছেন ভারতীয় নারীরা। সম্প্রতি নিজের বোলপুর সফরের শেষ দিন বল্লভপুর মোড়ের বাবু বাগদীর চায়ের দোকানে ঢুকে আচমকাই তাঁর স্ত্রী মেনকার হাত থেকে খুন্তি নিয়ে পাঁচমিশেলী তরকারী রাঁধতে শুরু করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩০ ডিসেম্বর এই ঘটনার পর কলকাতা ফিরে আসেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কলকাতায় ফিরে আসার আগেই আদিবাসী দোকানে রান্নার ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সোশাল মিডিয়ায়। তারই একটি ছবি নিজের টুইটার একাউন্টে রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস লেখেন, ‘‘যে কাজ দিদিকে ৫ মাস পরে করতে হবে। সেই কাজ এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছেন।’’
এই টুইটের দু’দিন পর শনিবার সকালে সম্বিৎ ফেরে তৃণমূল নেতৃত্বের তড়িঘড়ি পর পর টুইট করে এই আক্রমণের জবাব দেন তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড। প্রথমে বারসতের চিকিত্সক সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা ও বসিরহাটের সাংসদ নুসরাত জাহান। টুইটে কাকলি লেখেন, ‘আপনি যদি একজন নারী হন এবং রাজনীতিতে যোগদানে ইচ্ছুক থাকেন, জেনে রাখুন আমাদের দেশের বিজেপিরা নারীবিদ্বেষ নিয়ে জর্জরিত। তাঁরা নারীদের রান্নাঘরে পাঠানোর চেষ্টা করছেন। আমরা ভাবতে পারছি না যে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পরিবারের মহিলারা কত কম সম্মানিত হন।’’
বারাসতের তৃণমূল সাংসদের পর মন্ত্রী শশী পাঁজা টুইটে লেখেন, ‘বিজেপি আবার তাঁদের আসল রং দেখিয়ে দিল। ভারতের একমাত্র মহিলা মু্খ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে তাঁরা কী ভাবেন, এর থেকেই স্পষ্ট। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, যে আমাদের মহিলারা তাঁদের শাসনে নিরাপদে নেই। আপনার সংকীর্ণতার সমালোচনা করার আগে জানাই আপনাদের মনিব একজন চা-ওয়ালা’। এরপরই টুইটে অভিনেত্রী নুসরত জাহান লেখেন, ‘কৈলাস বিজয়বর্গীয় মন্তব্য পুরোপুরি নারীবিদ্বেষী। বিজেপি প্রতিটি নারীকে অপমানের সব মাত্রা অতিক্রম করেছে। যাঁরা রান্নাবান্না করেন, তাঁরা তাঁদের পরিবারকে ভাল রাখেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি তাঁকে আবার আক্রমণ করে কুকথা বলেছে। লজ্জাজনক।’’ এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূল যে এখন পুরোপুরি প্রশান্ত কিশোরের নেতৃত্বে চলছে, তা তৃণমূলের মহিলা নেত্রীদের টুইটে স্পষ্ট হয়ে গেল। কৈলাসজি দু’দিন আগে টুইট করেছিলেন। তাতেও মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে কোনও খারাপ কথা লেখেননি। কিন্তু যেহেতু প্রশান্ত কিশোর ও আইপ্যাকের মনে হয়েছে ওই টুইটে দিদির অপমান হয়েছে। তাই তৃণমূলনেত্রীরা তাঁদের লিখে দেওয়া টুইট নিজেদের টুইট একাউন্টে লিখেছেন।’’
আরও পড়ুন: হলদিয়ায় সভার আগে মহিষাদলে ছেঁড়া হল শুভেন্দুর ফ্লেক্স
আরও পড়ুন: বঙ্গে কত আসন পেতে পারে পদ্ম? অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা করেছে বিজেপি