স্বাধীনতা দিবসের ছুটির পরদিন থেকেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠনের কাজ শুরু করে দিতে হবে। অথচ মঙ্গলবারও পঞ্চায়েত মামলার রায় হল না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চের অন্যতম সদস্য, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত থাকায় এ দিন সুপ্রিম কোর্টে শুনানি বা রায় কোনওটাই হল না। কখন হবে, তা-ও নির্ভর করছে, বিচারপতি চন্দ্রচূড় কবে কাজে যোগ দেবেন, তার উপরে।
রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী বিকাশ সিংহ অনুরোধ জানান, সুপ্রিম কোর্ট কোনও একটা রায় ঘোষণা করুক। কারণ, ১৬ অগস্ট থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, বোর্ড গঠনের কাজ শুরু করে দিতে হবে। না হলে উন্নয়নের কাজে সমস্যা দেখা দেবে। কিন্তু প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র জানিয়ে দেন, যে হেতু তিন বিচারপতির বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়েছে, তাই দুই বিচারপতির পক্ষে রায় দেওয়া সম্ভব নয়। ১৫ অগস্ট ছুটি থাকায় ১৬ অগস্টে আদালতের কাজের তালিকায় মামলাটি রাখার অনুরোধ করেন আইনজীবীরা। কিন্তু প্রধান বিচারপতি জানান, বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের উপরেই তা নির্ভর করছে।
সোমবারও শীর্ষ আদালতে রাজ্য যুক্তি দিয়েছিল, পঞ্চায়েত সমিতি বা বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত উন্নয়নের কাজ আটকে রয়েছে। অর্থ কমিশনের শর্ত অনুযায়ী, নিয়ম মেনে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হলেই বরাদ্দ অর্থ মঞ্জুর হবে। ফলে সেই অর্থ আটকে রয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টই নির্দেশ দিয়েছে, যে সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি, গেজেট বিজ্ঞপ্তি করে সেই সব আসনের ফলাফল প্রকাশ করা যাবে না। ফলে সিংহভাগ জেলাতেই বোর্ড, সমিতি গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। আইনজীবীরা অবশ্য বলছেন, এ দিন রায় না হলেও প্রশাসনিক বা সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হওয়ার কথা নয়। কারণ, প্রশাসক বা অফিসার নিয়োগ করে পঞ্চায়েতের কাজ চালানো সম্ভব।
সোমবার পঞ্চায়েত মামলার শুনানির পরে ঠিক হয়েছিল, মঙ্গলবার সওয়াল-জবাব শেষ করে তার পরে শীর্ষ আদালত এ বিষয়ে রায় শোনাবে। বিজেপির তরফে আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়ার আরও সওয়াল করা বাকি ছিল। তার পর রাজ্যের তরফেও পাল্টা জবাব দেওয়ার কথা। কিন্তু আজ বিচারপতি চন্দ্রচূড় অনুপস্থিত থাকায় এর কোনওটাই হয়নি।
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার আপাতত পাঁচ দিন অপেক্ষা করতে চাইছে। কারণ, প্রশাসনিক কর্তাদের আশা, তার মধ্যেই কোনও একটা রায় দেবে সর্বোচ্চ আদালত। পাঁচ দিনের পরেও সমাধানসূত্র না পাওয়া গেলে তখন নতুন করে কী পদক্ষেপ করা হবে, তা চিন্তাভাবনা করবে সরকার। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। আধিকারিকদের একটি অংশের যুক্তি, আপাতত পঞ্চায়েত স্তরে বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে এসডিও এবং জেলা পরিষদ স্তরে জেলাশাসকেরা দায়িত্ব সামলাবেন।