কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
হাওড়ার বালি পুরসভার অন্তর্গত বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগামী ছ’দিনের মধ্যে ওই নির্মাণ সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলতে হবে। শুক্রবার সকাল ১১টায় ভাঙার কাজ শুরু করতে হবে বলেও জানান বিচারপতি।
বালি পুরসভার অন্তর্গত এলাকায় ২৯৫ বর্গমিটার জুড়ে একটি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে বলে অভিযোগ। সেটি ভাঙার আবেদন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। বিচারপতি অমৃতা সিংহের সিঙ্গল বেঞ্চ নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেয়। পরে মামলাটি ওঠে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেও ওই রায় বহাল ছিল। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে লিলুয়া থানার ওসি এবং সংশ্লিষ্ট নির্মাণকারী সংস্থার প্রধানকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যান নির্মাণ সংস্থার প্রধান পার্থ ঘোষ এবং লিলুয়া থানার ওসি সঞ্জয় শ্রীবাস্তব। ওই নির্মাণের কিছু অংশ যে বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছিল, পার্থ তা স্বীকার করে নিয়েছেন। তার পরেই নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই নির্মাণ ভাঙতে বালি পুরসভা থেকে লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন। পুলিশের সাহায্য ছাড়া ওই নির্মাণ ভাঙা সম্ভব নয় বলে জানায় পুরসভা। পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও ওঠে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে লিলুয়া থানার ওসি জানান, ঘটনার সময়ে থানায় অফিসার ইন-চার্জ হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন অন্য কেউ। তাই তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৯ নভেম্বর। ওই দিন পুরসভাকে রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে। এ ছাড়া, ওই দিন লিলুয়া থানার তৎকালীন ওসি অংশুমান চক্রবর্তীকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তাঁর বিরুদ্ধেই অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে।
এই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, কোনও ভাবেই কোনও বেআইনি নির্মাণ বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার বাড়িও হাওড়ায়। সেই বাড়ি যদি বেআইনি হয়, তবে তা-ও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলতে হবে।’’ একইসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের একটি বেআইনি ক্লাবঘরও বৃহস্পতিবার ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।