বিচারক হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, ‘‘আজ আমি কিছু বলব না, যা করার কলম দিয়ে করে দেব।’’ — ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের ধীর গতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুললেন বিচারক। স্পষ্টই বললেন, ‘‘কোথায় ডেভেলপমেন্ট?’’ ক্ষোভের সুরেই তিনি জানিয়েছেন, তিন জনকে গ্রেফতারের পর শুধু আবেদন জমা পড়ছে। এই বিষয়ে যা প্রয়োজনীয়, তা করার কথাও জানিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি, হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, ‘‘আজ আমি কিছু বলব না, যা করার কলম দিয়ে করে দেব।’’
শনিবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের শুনানি ছিল। সেখানেই বিচারক ফের তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি সাহা, কুন্তল ঘোষে গ্রেফতারের পর শুধু আবেদন আর আবেদন জমা পড়ছে। তাঁর কথায়, ‘‘কোথায় ডেভেলপমেন্ট? আমার জায়গায় এসে দেখুন, কী চলছে? আমি কি এখানে আপনাদের রক্ষা করার জন্য বসে রয়েছি?’’ জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তাঁরা অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে রয়েছেন। তাতে সুর চড়িয়ে বিচারক বলেন, ‘‘তিন জনকে গ্রেফতার করেই আপনার কাজ হয়ে গেল?’’
আইন অনুযায়ী, গ্রেফতারির ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা করতে হয়। তাপস, নীলাদ্রি, কুন্তলের মামলার চার্জশিট পেশ করতে আর ২১ দিন বাকি। বিচারক বলেন, ‘‘এই ২১ দিনের মধ্যেই কিছু করে দেখান।’’
এর মধ্যেই ‘মিডলম্যান’ নীলাদ্রির জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। আদালতে তিনি জানান, সিবিআই দাবি করেছে, নগদ লেনদেন হয়েছে। তা হলে কোনও ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট থাকবে। তিনি বলেন, ‘‘নীলাদ্রিকে টাকা কেউ টাকা দেননি।’’ এই প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, নীলাদ্রি কার থেকে টাকা নিয়েছেন, কাকে টাকা দিয়েছেন, সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নীলাদ্রির আইনজীবীর পাল্টা দাবি, সিবিআইয়ের রিমান্ড কপিতেই লেখা রয়েছে কুন্তল এবং তাপস, এই দু’জনের মধ্যে এক জনের থেকে টাকা নিয়ে অন্য জনকে দেওয়া হয়েছিল। তা হলে নীলাদ্রির কথা কেন উঠছে?
তাপসের আইনজীবীর দাবি, ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার বিষয়টি কোনও সরকারি কর্মীর মাধ্যমেই হতে পারে। সেই সরকারি কর্মীকে প্রকাশ্যে আনার কথা জানিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে সে দিকে এগোতে চাইছি। টাকা কাকে দেওয়া হয়েছে, কে নিয়েছে, প্রমাণ রয়েছে আমাদের কাছে।’’ এই প্রসঙ্গেই বিচারক বলেন, ‘‘বৃত্ত সম্পূর্ণ করুন। যা প্রয়োজনীয়, তা-ই করুন।’’