প্রতীকী ছবি।
সার্কিট বেঞ্চে মামলার শুনানির জন্য উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছিলেন বিচারপতি আশিসকুমার চক্রবর্তী। কিন্তু আচমকাই অসুস্থ হয়ে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। নার্সিংহোম থেকে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুরে প্রয়াত হয়েছেন বিচারপতি চক্রবর্তী। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আগামিকাল অর্থাৎ সোমবার থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সার্কিট বেঞ্চে মামলা শোনার কথা ছিল তাঁর।
নার্সিংহোম সূত্রে জানানো হয়েছে, সিরোসিস অব লিভারে আক্রান্ত ছিলেন বিচারপতি আশিসকুমার চক্রবর্তী। তাঁর অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। শুক্রবার ভর্তির পরে দেখা যায় তাঁর রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই কম। তাঁকে আইসিইউয়ে ভেন্টিলেশনের সাহায্যে রাখা হয়েছিল। এন্ডোস্কোপি করে রক্তপাতও বন্ধ করা হয়। তার পরেও রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়নি। এ দিন ২টো ২০ মিনিট নাগাদ হৃদ্যন্ত্র স্তব্ধ (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) হয়ে বিচারপতির মৃত্যু হয়।
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, বিচারপতি আশিসকুমার চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৬৫ সালের ১২ ডিসেম্বর। নিউ আলিপুর
মাল্টিপারপাস স্কুলের এই প্রাক্তনী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের পাঠ শেষ করে ১৯৯৩ সালে আইনি পেশায় যোগ দেন। ওকালতি পেশায় সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টে দেওয়ানি, কোম্পানি এবং সাংবিধানিক বিষয়ের বিভিন্ন মামলা লড়েছেন। ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর তিনি কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর তিনি স্থায়ী বিচারপতি হয়েছিলেন।
হাইকোর্টের খবর, আগামিকাল, সোমবার থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচারপতি আশিসকুমার চক্রবর্তী এবং বিচারপতি মহম্মদ নিজামুদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা শুনানির কথা ছিল। ওই বেঞ্চে বিচারপতি চক্রবর্তীই ছিলেন ‘সিনিয়র’। পাশাপাশি তাঁর ‘সিঙ্গল বেঞ্চ’-এও শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিচারপতি চক্রবর্তীর প্রয়াণের পর এ দিন নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে হাইকোর্ট প্রশাসন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিচারপতি চক্রবর্তীর জায়গায় বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য ওই ডিভিশন বেঞ্চ এবং সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা শুনবেন।
বিচারপতি চক্রবর্তীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হাইকোর্টের আইনজীবীরা। তাঁরা এ-ও বলছেন, এই প্রয়াণে হাইকোর্টের একটি বিচারপতি পদ শূন্য হল। তার প্রভাব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির উপরেও পড়বে।