বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। ফাইল চিত্র।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে পথে নামতে হবে। দিল্লিতে আজ রাজ্যের সাংসদের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশই দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা।
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের দিল্লির বাসভবনে বঙ্গের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন নড্ডা। সাংসদেরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী।
দিন কয়েক আগেই পশ্চিমবঙ্গে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যের নেতাদের প্রশ্ন করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম বাড়ছে কী ভাবে? শাহের সামনেই উঠে এসেছিল রাজ্য বিজেপির আন্দোলনহীনতার প্রসঙ্গ। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সে ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নামবে বিজেপি। ব্লক স্তরে দলের কর্মী-সমর্থকেরা বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নেবেন।’’ তিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন জেলায় গিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন রাজ্যস্তরের নেতারা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলকে আন্দোলনমুখী করে বিরোধী পরিসর দখলে আরও জোর দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আন্দোলনহীনতার পাশাপাশি, রাজ্য বিজেপি জেরবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে। বিভিন্ন নেতার পরস্পর বিরোধী মন্তব্য প্রায় প্রতিদিনই উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমে। যার ফলে দিশাহীন হয়ে পড়ছেন সাধারণ কর্মী ও সমর্থকেরা। বিজেপি সূত্রের খবর, বৈঠকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে রাজ্যে নেতাদের একযোগে কাজের নির্দেশ দিয়েছে নড্ডা। বৈঠকে উপস্থিত এক সাংসদ জানিয়েছেন, বৈঠকে সভাপতি বলেছেন, পঞ্চায়েতে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বুথস্তরের কর্মীদের মতামতকেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। বৈঠকের পরে সাংসদ তথা বিজেপির সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্য বিজেপিতে যদি কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে থাকে, আশা করি তা মিটে যাবে।’’ যদিও সুকান্তের দাবি, ‘‘বঙ্গ বিজেপিতে কোনও কোন্দল নেই। আমরা সকলেই এক সঙ্গে দলের হয়ে কাজ করি।’’
আজকের বৈঠকে সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সিএএ নিয়ে সরব হন। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, সিএএ দেশের আইন। তা চালু হবেই। ঠিক সময়ে জানা যাবে, তা কী ভাবে চালু হবে। রাজ্যের সব বিজেপি সাংসদ বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূলে যোগ দেওয়া সাংসদ অর্জুন সিংহ।
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নের প্রকল্প ঘিরে রাজ্যে যে বিপুল আর্থিক অনিয়ম হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা করতে আগামিকাল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন তথা পঞ্চায়েতমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করবেন সুকান্ত এবং শুভেন্দু। গিরিরাজ ছাড়া কাল শাহের সঙ্গে বৈঠকে কথা রয়েছে শুভেন্দুর। বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, রাজ্যের ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, সীমান্ত অনুপ্রবেশ, নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে গতি আনার মতো বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।