Elephant Attack in Jalpaiguri

সঙ্গিনীর অভাবেই উন্মত্ত দাঁতাল! মাধ্যমিকের ছাত্রকে পিষে মারা হাতি এখন বন দফতরের কড়া নজরে

ঘাতক হাতিটিকে চিহ্নিত করে এলাকা থেকে দূরে পাঠিয়েছে বন দফতর। গভীর জঙ্গলে তার গতিবিধির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। আবার কোনও ভাবে যাতে সে লোকালয়ে চলে না আসে, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:০০
Share:
Jalpaiguri elephant that attacked Madhyamik student was in search for a lady elephant as it was their mating season says Forest Department

বৃহস্পতিবার, মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন হাতির হামলায় মৃত্যু হয় অর্জুন দাসের। ফাইল ছবি।

মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে পিষে মারা সেই দাঁতাল হাতি উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল সঙ্গিনীর অভাবে। জানাচ্ছে বন দফতর। বছরের এই সময়টিতেই হাতিদের প্রজনন ঋতু চলে। বন দফতরের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট বলছে, জলপাইগুড়ির ওই দাঁতালও মিলনেচ্ছু হয়ে উঠেছিল। কিন্তু দলছুট হয়ে পড়ায় কোনও সঙ্গিনী পায়নি। তার ফলেই উন্মত্ত হয়ে ওঠে। এবং এই অবস্থাতেই সামনে পেয়ে আক্রমণ করে বসেছিল পরীক্ষা দিতে যাওয়া কিশোর এবং তার বাবাকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন। বাবার সঙ্গে বাইকে চড়ে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের মহারাজা ঘাট থেকে বেলাকোবায় পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল অর্জুন দাস। মাঝপথে দাঁতাল হাতিটির মুখে পড়ে যায় তারা। হাতিটি আছড়ে ফেলে পিষে মারে অর্জুনকে।

ঘাতক হাতিটিকে চিহ্নিত করে এলাকা থেকে দূরে পাঠিয়েছিল বন দফতর। তবে তাকে আবার লোকালয়ের কাছাকাছি দেখা গিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। আতঙ্কও তৈরি হয়েছে। তবে বনকর্মীরা জানিয়েছেন, হাতিটির গতিবিধির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। গভীর জঙ্গলে পাঠানোর পর, আবার কোনও ভাবে যাতে সে লোকালয়ে চলে আসতে না পারে, সেই ব্যবস্থাও করেছে বন দফতর।

Advertisement

দাঁতালটিকে লোকালয় থেকে দূরে সরানোর প্রক্রিয়া শুক্রবার থেকেই শুরু করেছিল বন দফতর। বিকেলের পর তাকে তাড়া করে সরস্বতীপুর জঙ্গলের দিকে পাঠানো হয়। বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের আধিকারিক হরি কৃষাণ জানান, আপাতত হাতিটি সরস্বতীপুর জঙ্গলের ভিতর রয়েছে। বৈকুণ্ঠপুরের আরও গভীর জঙ্গলে তাকে পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা।

তবে শনিবার সকালেই ওই হাতিটিকে তিস্তা খালের পাশের জঙ্গলে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি করেন স্থানীয়েরা। ওই খাল পার করলেই টাকিমারি গ্রাম। তবে গ্রামবাসীদের আতঙ্কের কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করছেন বনকর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তিস্তা খালের পাশে হাতিটিকে দেখামাত্রই পটকা ফাটিয়ে তাকে জঙ্গলের গভীরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং নজর রাখা হচ্ছে।

উত্তরবঙ্গ বন বিভাগের সহকারী মুখ্য বনপাল উজ্জ্বল ঘোষ জানান, হাতিটি যাতে আবার লোকালয়ে ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে। আপাতত বৈকন্ঠপুরের জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে কেউ যাতে যাতায়াত করতে না পারেন, তার ব্যবস্থা করেছে বন দফতর। জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদা গাড়ির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পুলিশ এবং বনকর্মীরা ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন। শুধু মাধ্যমিকই নয়, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীনও জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার পরীক্ষার্থীদের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement