স্পিকার বলেন, ‘‘রাজ্যপালের উচিত বিরোধী বিধায়কদের পাঠ দেওয়া। বলা উচিত, এ সব ( গেলামাল) না করতে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, তিনি এ সবে উৎসাহ দেন। নিরুৎসাহ করেন না।’’
জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
এক্তিয়ারের প্রশ্নে আবারও রাজভবনের সঙ্গে বিবাদের ইঙ্গিত বিধানসভার। সদ্যসমাপ্ত বাজেট অধিবেশনে অশান্তি এবং গোলমালের অভিযোগে বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করার ব্যাখ্যা চেয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাতেই তাঁর এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, ইতিবাচক পরামর্শ দেওয়ার বদলে রাজ্যপাল গোলমালে উৎসাহিত করছেন।
এ বারের অধিবেশনে দু’দফায় বিজেপির সাত বিধায়ক সাসপেন্ড হয়েছেন। অধিবেশনের শেষ দিন ২৮ মার্চ গোলামাল, মারামারির অভিযোগে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়কদের মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। হাতাহাতির সময় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের নাক ফাটে। দলের সচেতক মনোজ টিগ্গার পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরার কথা জানায় বিজেপিও। তারপরই সাসপেন্ড করা হয় বিজেপি পাঁচ বিধায়ককে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে দরবার করেন তাঁরা। সেই ঘটনার সূত্রেই বিবাদ রাজ্যপাল ও স্পিকারের মধ্যে।
সূত্রের খবর, মারামারি ও সাসপেন্ড হওয়ার ব্যাপারে বিজেপি বিধায়কদের অভিযোগ উল্লেখ করে বিধানসভার সচিবকে চিঠি লিখে ঘটনার কথা সবিস্তার জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। মনে করা হচ্ছে, স্পিকারের বিরুদ্ধে বিজেপি পক্ষপাতিত্বের যে অভিযোগ তুলেছিল, তা-ও বুঝতে চেয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই শুক্রবার স্পিকার বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিধানসভার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। ঠিক যেমন আমিও তাঁর কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’’ এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যপাল এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। স্পিকার বলেন, ‘‘রাজ্যপালের উচিত বিরোধী বিধায়কদের পাঠ দেওয়া। বলা উচিত, এ সব ( গেলামাল) না করতে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, তিনি এ সবে উৎসাহ দেন। নিরুৎসাহ করেন না।’’
রাজ্যপালের ভূমিকাকে সমর্থন করেছে বিজেপি। রাজ্য দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিধানসভায় স্পিকার দলতন্ত্র চালান বলেই বিজেপির বিধায়কেরা বিচার পেতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবিধান রক্ষায় রাজ্যপাল যা প্রয়োজন মনে করছেন, তা-ই করছেন। তাতে অযথা এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রাজ্যপালকে পাল্টা আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘এই তো দেখলাম, বিহার বিধানসভায় বিধায়ককে রক্ষী দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। বিধানসভায় কী হবে তা তো ঠিক করবেন সদস্যরা, স্পিকার। রাজ্যপাল এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে রাজভবনকে বিজেপির ডাকঘরে পরিণত করেছেন।’’