ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুল।—নিজস্ব চিত্র।
ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুলে সদ্য যোগ দেওয়া সেই দুই শিক্ষককে প্রত্যাহার করে নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। তাঁদের অন্য কোনও স্কুলে বদলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিকাশ ভবন। তবে স্কুল শিক্ষা দফতরের বক্তব্য, দাড়িভিটে পাঠানো উর্দু ও সংস্কৃতের ওই দুই শিক্ষককে আলাদা করে বদলি করা হচ্ছে এমন নয়, সারা রাজ্যেই কয়েকশো শিক্ষককে বদলি করা হবে। সেই তালিকায় ওই দু’জন শিক্ষকও রয়েছেন।
দু’জন শিক্ষক প্রত্যাহার করা হলেও আপাতত দাড়িভিটে কোনও নতুন শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে না। কেন? এক স্কুল শিক্ষা কর্তার ব্যাখ্যা,‘‘শূন্য পদে শিক্ষক-শিক্ষিকা পেতে বিভিন্ন স্কুল বরাবর বিকাশ ভবনে দরবার করে থাকে। কিন্তু দাড়িভিটে শিক্ষক পাঠানোর পরে অশান্তি হল। তাই আপাতত সেখানে যেমন চলছে, তেমনই চলুক।’’ সূত্রের খবর, ওই স্কুলের ২২ জন শিক্ষক পদের মধ্যে এখন ১৬ জন কর্মরত রয়েছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর দাড়িভিটে উর্দু ও সংস্কৃতের দুই শিক্ষক কাজে যোগ দিতে গেলে গোলমাল শুরু হয়। গুলি চলে, তাতে মারা যায় দুই প্রাক্তন ছাত্র। পুলিশ অবশ্য গুলি চালানোর ঘটনা অস্বীকার করে। ঘটনার তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। তার পরেও এখনও পর্যন্ত গুলি কোথা থেকে চলল, কারা চালাল তার খোঁজ মেলেনি। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি পলাতক। বিকাশ ভবনের তদন্তেও তিনি সহযোগিতা করেননি।
আরও পড়ুন: সঙ্কট নেই মিউচুয়াল ফান্ডে, লগ্নিকারীদের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের
ঘটনার পরে স্কুল শিক্ষা দফতর বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে স্কুল পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়ে মহকুমা শাসকের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহ-প্রধান শিক্ষকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের বর্তমান ডিআই রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলকেও সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত চালানো হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে বিকাশ ভবন জেনেছে, দাড়িভিটে শূন্য শিক্ষক পদের তালিকা তৈরি করেছিলেন বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুরের কর্মরত ডিআই নারায়ণ সরকার। তাঁর ভুলের জন্যই এত বড় কাণ্ড ঘটে যায়। সম্প্রতি নারায়ণবাবুকেও সাময়িক বরখাস্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: অচ্ছে দিন আসবে না, দাবি নকল মোদীর
তবে এখনকার ডিআই-এর বিশেষ গাফিলতি এখনও দেখছেন না স্কুল শিক্ষা কর্তারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অভিভাবকদের বাধার মুখে পড়ে মুচলেকা লিখে দিয়েছিলেন তিনি। এবং পরের দিন দুই শিক্ষককে যোগ দিতে পাঠানোর আগে রবীন্দ্রনাথবাবু বিকাশ ভবনের অনুমোদনও নেননি। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা খতিয়ে দেখছে স্কুল শিক্ষা কমিশনার। বিকাশ ভবনের খবর, দাড়িভিট থেকে শিক্ষা নিয়ে ডিআই, এসআই, প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালন সমিতির প্রধানদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।