থার্মাল স্ক্রিনিং। নিজস্ব চিত্র
করোনা আবহে দ্বিতীয় বার বন্ধ হওয়ার পর কেটে গিয়েছিল প্রায় এক মাস। মঙ্গলবার থেকে ভক্তদের জন্য আবার খুলে দেওয়া হল মায়াপুর ইস্কন মন্দিরের দরজা।
গত ২২ মার্চ থেকে লকডাউন পর্বে এক টানা ১০৩ দিন বন্ধ ছিল নদিয়া তথা রাজ্যের পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র নদিয়ার মায়াপুরের ইস্কন মন্দির। এর পর গত ৫ জুলাই সকলের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হলেও কঠোর বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু সে বার মাত্র পঁয়ত্রিশ দিনের মাথায় ফের মন্দির বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন মন্দির কর্তৃপক্ষ। করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে ৯ অগস্ট থেকে বন্ধ হয়ে যায় ইস্কন। এ দিন ফের সেই বন্ধ মন্দিরের দরজা খুলল।
সে সময়ে ইস্কন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, চার দিকে বেড়ে চলা সংক্রমণের জেরেই মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাই জন্মাষ্টমীর ক’দিন আগে অতিরিক্ত জনসমাগম এড়াতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় এক মাস বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর আবার মন্দিরের দরজা সকলের জন্য খুলে দেওয়া হল।
ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস এ দিন বলেন, “এবারও মন্দিরে প্রবেশে বিধিনিষেধ প্রায় একই রকম থাকছে। সকালে ৯টা থেকে ১টা এবং বিকালে ৪টে থেকে ৭টা এই সময়ে কেবল বহিরাগত ভক্তেরা ভিতরে যেতে পারবেন।’’ তিনি জানিয়েছেন, আলাদা আলাদা প্রবেশ দ্বারে দর্শনার্থীদের স্যানিটাইজ় করে, থার্মাল চেকিং করে তবে ঢুকতে দেওয়া হবে। মন্দির চত্বরে তৈরি আছে একমুখী দর্শন পথ। সেই পথ দিয়েই সবাইকে যাতায়াত করতে হবে। মন্দির চত্বরে বসবাসকারীরাও যখন-তখন আসতে পারবেন না। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
গত জুলাই মাসে যখন প্রথম বার সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় ইস্কনের প্রধান আধ্যাত্মিক কেন্দ্র মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দির, তখনও মন্দিরে প্রবেশের জন্য জারি হয় এমনই একগুচ্ছ নির্দেশিকা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে চার দিকের পরিস্থিতিতে ভরসা রাখতে পারেননি ইস্কন কর্তৃপক্ষ।
লকডাউনে প্রায় সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর গুরুপূর্ণিমার দিন মন্দির খুললেও খোলেনি গেস্ট হাউস, কুপন কেটে দুপুরের প্রসাদের ব্যবস্থাও চালু হয়নি। জানা গিয়েছে, আগের মতো কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে মন্দিরের ভিতরে প্রতি দিনের নিত্যপুজো বা উৎসবের আয়োজন। শুধু মাত্র নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবক, পুরোহিত ছাড়া কার্যত প্রবেশ নিষেধ ছিল মন্দির চত্বরে। ভিতরে যাঁরা আছেন, তাঁদের ঘরের বাইরে বের হওয়ার নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ ইস্কনের নিজস্ব ‘মায়াপুর টিভির’ মাধ্যমে ভক্তদের মন্দির দর্শনের উপরে জোর দিয়েছিলেন।
যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ যাতে জীবনের ছন্দে ফিরতে পারে, সেই জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হল।
এবারে ভিতরের রেস্তরাঁও খুলে দেওয়া হচ্ছে, যাতে দর্শনার্থীদের খাওয়ার অসুবিধা না হয়। তা হলে দুপুরের প্রসাদ বা অতিথিশালাও কি খুলে যাচ্ছে? বুকিং কি নেওয়া হবে? জবাবে ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, “সবটাই নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপরে। যদি দেখা যায় মানুষের সমাগম ভাল হচ্ছে, অনেকে আসতে বা থাকতে চাইছেন, পাশাপাশি সংক্রমণের হার তেমন বাড়েনি— তখন সবই খোলা যেতে পারে।’’