Petrol price

VAT: তেলে ভ্যাট কি কমাবে বাংলা

গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে বিক্রয় কর বাবদ বেশি রাজস্বের আশা করছে রাজ্য। ২০২০-২১ আর্থিক বছরে এই কর বাবদ প্রায় ৮২০০ কোটি টাকা আয় ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৪:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

পেট্রল-ডিজ়েলের উপর উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। দেশে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি তাদের অংশের মূল্যযুক্ত কর (ভ্যাট) কমিয়ে তেলের দর আরও খানিকটা শস্তা করার পথে হেঁটেছে। এ বার কী করবে পশ্চিমবঙ্গ?

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপ এ রাজ্যের উপর বাড়তি কিছুটা চাপ বাড়াবে। তাঁদের যুক্তি, রাজ্যের আয় সীমিত। কেন্দ্র শুল্ক কমানোয় এমনিতেই রাজ্যের ভ্যাটের আদায় সমানুপাতিক হারে কমবে। তার উপর আরও ছাড় দিতে গেলে রাজ্যের ভ্যাট বাবদ আয়ও অনেকটা ধাক্কা খাবে। প্রবল আর্থিক টানাটানির মধ্যে রাজ্যে যখন একাধিক খরচসাপেক্ষ সামাজিক প্রকল্প চালাচ্ছে, তখন তেলের দাম আরও খানিকটা কমানোর মতো ‘সাহসী’ পদক্ষেপ রাজ্য কতটা করতে পারবে, তাতে সন্দেহ রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রাজ্যের তরফে এ নিয়ে কোনও বার্তা পাওয়া যায়নি। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের ব্যাখ্যা, তেলের মূল দামের সঙ্গে পরিবহণ খরচ এবং কেন্দ্রীয় শুল্ক যোগ করে তার উপর ভ্যাট চাপানো হয়। অন্যান্য রাজ্যগুলিতে এখন ২০-৩০ শতাংশের মধ্যে ভ্যাট ঘোরাফেরা করে। এ রাজ্যের ক্ষেত্রে পেট্রলে ২৫% এবং ডিজ়েলে তা ১৭%। এখন কেন্দ্র তাদের শুল্ক কমানোয় রাজ্যের আয় কিছুটা কমবে।

Advertisement

গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে বিক্রয় কর বাবদ বেশি রাজস্বের আশা করছে রাজ্য। ২০২০-২১ আর্থিক বছরে এই কর বাবদ প্রায় ৮২০০ কোটি টাকা আয় ছিল। সেখানে চলতি অর্থবর্ষে সেই পরিমাণ ৮৬০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে অনুমান করছে রাজ্য। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এই খাতে তেল থেকে আয়ের বড় উপাদান থাকে। ফলে কেন্দ্রীয় শুল্ক কমায় রাজ্যের কর আদায় যতটা কমবে, নিজেরা ভ্যাট কমালে সেই আয় আরও কম হবে। সরকারি হিসেবে গত বুধবার পেট্রল-ডিজ়েলের মূল দামের সঙ্গে পরিবহণ খরচ এবং কেন্দ্রীয় শুল্ক যোগ করলে তা ৮০ টাকার মতো হত। তা ধরলে পেট্রল-ডিজ়েলে ভ্যাট বাবদ রাজ্যের আয় ছিল প্রতি লিটারে যথাক্রমে প্রায় ২০ টাকা ও ১৩-১৪ টাকা।

এ দিন অবশ্য অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বা অর্থ দফতরের কর্তারা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে দফতরের অন্দরের বক্তব্য, বরাবরই তেল থেকে কর বাবদ কেন্দ্রের আয় রাজ্যের তুলনায় বেশি। কারণ, কেন্দ্রের করের মধ্যে সেস ধরা থাকে। কিন্তু সেস বাবদ কোনও অর্থ রাজ্যের কাছে আসে না। পুরো সেই অর্থটা পায় কেন্দ্র। স্বাভাবিক ভাবেই তেলের দাম কমিয়ে মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার সদিচ্ছা কেন্দ্রের থাকলে তারা আরও দাম কমাতে পারত। দাম কমানোর বাকি দায় ছেড়ে দেওয়ার অর্থ, রাজ্যগুলির আয়ে ধাক্কা দেওয়া।

Advertisement

তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনের টুইট, “দাম বাড়িয়ে সামান্য কমানোর নাটক। কর কেন্দ্র বেশি পায়। ক্ষতি কম। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি কেন্দ্রের প্রাপ্য পায়। বাড়তি পায়। কর কমালেও পুষিয়ে দেয়। বাংলা বকেয়াই পায় না। আগে মূল দাম কমানো হোক।” বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পেট্রল, ডিজেলের উপরে উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে সময়োপযোগী পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। সরকার বা দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের দাবি কখনও করা হয়নি বা করা হচ্ছে না যে, এতেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু যে রাজ্য সরকার পেট্রল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলছে, তারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে না কেন? পশ্চিমবঙ্গ সরকার শুল্কে ছাড় না দিলে ভাইফোঁটার পর থেকে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement