TET Scam

প্রাথমিক টেট কাণ্ডেও অনুব্রত যোগ? জেলবন্দি তৃণমূল নেতাকে নিয়ে নয়া দাবি ইডির

ইডি সূত্রের অভিযোগ, প্রাথমিক টেট কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে অনুব্রত দুর্নীতিতে সলতে পাকানো শুরু করেছিলেন।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৫
Share:

অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

তাঁর নাম এর আগে জড়িয়েছে কয়লা ও গরু পাচারে। এমনকি ভোট পরবর্তী হিংসার মামলাতেও তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এ বার প্রাথমিক টেট কাণ্ডেও বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি) সূত্রের। গরু পাচারে সিবিআইয়ের মামলায় এখন আসানসোলে জেল হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত।

Advertisement

ইডি সূত্রের অভিযোগ, প্রাথমিক টেট কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে অনুব্রত দুর্নীতিতে সলতে পাকানো শুরু করেছিলেন। ওই সূত্র জানিয়েছে, ২০১২ সালের মার্চে কলেজ স্ট্রিটে মানিক-ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের একটি ভাড়া বাড়িতে পাঁচটি বেসরকারি বিএড কলেজের চেয়ারম্যানকে নিয়ে ‘বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স’ (বিটিটিএ) নামে একটি সংগঠন শুরু হয়েছিল। পরবর্তী কালে প্রায় ৬০০ বেসরকারি বিএড কলেজকে ওই সংগঠনের ছাতার তলায় নিয়ে আসা হয়। ওই সংগঠনেরই অন্যতম সদস্য ছিলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার চেয়ারম্যান। তদন্তকারীদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি ছিলেন অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ। বকলমে তিনি ছিলেন ওই সংগঠনে অনুব্রতের প্রতিনিধি। তাঁকে শীঘ্রই তলব করা হবে বলে ইডি সূত্রের দাবি।

সম্প্রতি আসানসোল আদালতে গরু পাচারের মামলায় অনুব্রতের বিরুদ্ধে পেশ করা‌ ইডির চার্জশিটে ওই ব্যক্তিকেই সাক্ষী করা হয়েছে। ইডির দাবি, ওই ব্যক্তির আরও তিনটি সংস্থা রয়েছে। ওই সব সংস্থার মাধ্যমে ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে রাজ্যে প্রায় ৩০টি বেসরকারি বিএড, পলিটেকনিক ও মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হয়েছিল। যার নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ, ভবন নির্মাণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার উপর খরচ করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে পাঁচ থেকে‌ সাত বছরে প্রায় ৩০টি বেসরকারি কলেজ তৈরি কার্যত অসম্ভব কাজ।

Advertisement

গরু পাচারের লভ্যাংশের একটা মোটা টাকা যে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল, তা আগেই জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রের দাবি, গরু পাচারের‌ টাকাতেই ওই সব বেসরকারি কলেজ নির্মাণ করা হয়ে থাকতে পারে। ওই কলেজগুলির মাধ্যমে অযোগ্য প্রার্থীদের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) ও প্রাথমিক টেট-এ ‘বিএড’ এবং ‘ডিইএলইডি’-র জাল সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছিল বলেও সন্দেহ তদন্তকারীদের। তাঁদের অভিযোগ, কয়েক কোটি টাকার জাল শংসাপত্রের মাধ্যমে হাজার হাজার অযোগ্য প্রার্থীকে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে।

তদন্তকারীদের সূত্রের অভিযোগ, অনুব্রত নিজে তাঁর ঘনিষ্ঠ ওই প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাথমিক টেট-এর অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা মানিকের কাছে পৌঁছে দিতেন বলেও তথ্যপ্রমাণ হতে এসেছে। এ-ও অভিযোগ, এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি এবং নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক পদের হাজার হাজার অযোগ্য প্রার্থীকে জাল শংসাপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল।

ইডি- সূত্রের অভিযোগ, ‘বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স’-এর ছাতার তলায় থাকা বেসরকারি বিএড কলেজগুলির একাংশকে দুর্নীতি কাণ্ডে সামিল করা হয়েছিল। ২০১৭-য় ওই সংগঠনের মানিক-ঘনিষ্ঠ তৎকালীন সভাপতি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন। এরপর সংগঠনের নাম বদলে ‘বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশন’ করা হয়। ইডির তদন্তকারীদের দাবি, মানিকের নির্দেশেই তাপসকে ওই সংগঠনের সভাপতি করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement