সিবিআই হেফাজতে এসএমএইচ মির্জা। নিজস্ব চিত্র
নারদ-কাণ্ডে এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করল সিবিআই। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের পুলিশ কর্তা এসএমএইচ মির্জা। এ দিন বিকেলেই তাঁকে নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। সিবিআইয়ের ওই বিশেষ আদালতে তদন্তকারী সংস্থা মির্জাকে পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন জানিয়েছে। সেই আবেদন মঞ্জুর করে বিচারক ওই পুলিশ কর্তাকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিন সকালে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় মির্জাকে। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে সিবিআই জানিয়েছে।
আদালত থেকে সিবিআই দফতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মির্জাকে।
অন্য দিকে মির্জার আইনজীবী সায়ন দে পাল্টা সওয়াল করেন, ‘‘মির্জাকে ৯ বার সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। প্রত্যেক বারই তিনি এসেছিলেন। সিবিআইকে আগাগোড়া সহযোগিতা করেছেন। তিনি এক জন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক। পালিয়ে যাবেন, এমন সম্ভাবনাও নেই। তা হলে হঠাৎ গ্রেফতার করার প্রয়োজন পড়ল কেন?’’
মির্জার গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এ দিন সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আইনি পদ্ধতিতে এটাই সঠিক প্রক্রিয়া। দুর্নীতি উন্মোচনের স্বার্থে সব অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা প্রয়োজন। আগেই করা উচিত ছিল। কেন করা হয়নি, সেটাই প্রশ্ন।’’
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এত বছর লেগে গেল! আরও আগে হলে মানুষের বিশ্বাস বাড়ত। সত্য উদ্ঘাটন হোক তাড়াতাড়ি। এই পুলিশ কর্তা নাকি বলেছিলেন, পার্টির জন্য টাকা তুলে দিতে হয়! ভাবা যায়। এ রাজ্যে যে ধরনের দুর্নীতির হয়েছে, মানুযের টাকা গিয়েছে— দোষীরা সকলে সাজা পাক।’’
আরও পড়ুন: দৌড়চ্ছে সিবিআই, হাইকোর্টে আগাম জামিনের শুনানি আজ, কী আছে রাজীবের ভাগ্যে?
মির্জাকে যদিও এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সাসপেন্ড রেখেছে রাজ্য প্রশাসন। এ দিন মির্জার গ্রেফতারি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে কোনও জবাব দিতে চাননি তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় গ্রেফতার হল, তা নিয়ে কি আমার মন্তব্য করা সাজে!’’
এ দিন মির্জার গ্রেফতারির খবর পেয়ে নারদ স্টিং অপারেশন যিনি চালিয়েছিলেন, সেই ম্যাথু স্যামুয়েল বলেন, ‘‘এটা খুব ভাল খবর। যে স্টিং অপারেশন আমি করেছিলাম, তার ফল মিলতে শুরু করেছে।’’