ফাইল চিত্র
পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তে তাঁর ভূমিকা বিভিন্ন স্তরে প্রশংসিত হয়েছিল। রাজ্যের সাম্প্রতিক চারটি ধর্ষণ মামলার তদন্তেও তাঁকে নজরদারির ভার দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেন সেই চারটি মামলার তদন্তে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বুধবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
উত্তর ২৪ পরগনার দু’টি, মালদহের একটি এবং কলকাতার একটি— মোট চারটি ধর্ষণের ঘটনায় যথাযথ তদন্ত নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন সুমিত্রা ভট্টাচার্য নিয়োগী নামে এক আইনজীবী। সেই সব ঘটনার তদন্তে দময়ন্তীকে নজরদারির ভার দেওয়ার সময় উচ্চ আদালত এটাও জানিয়ে দিয়েছিল যে, ওই আইপিএস অফিসার যদি এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে না-চান, সেটা তিনি হাই কোর্টকে জানাতে পারেন।
রাজ্য সরকারের তরফে ওই সব ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে হাই কোর্টে। সেই রিপোর্টে কী আছে, তা বিস্তারিত ভাবে জানা যায়নি। তবে আদালত সূত্রের ধারণা, ওই সব মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার, ফরেন্সিক পরীক্ষা এবং অপরাধের ঘটনার পুনর্নির্মাণ সংক্রান্ত কী কী কাজ তদন্তকারীরা করেছেন, তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়ে থাকতে পারে।
হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গত শনিবার বিকেলে লালবাজারে ওই চারটি ঘটনার তদন্তকারীদের নিয়ে বৈঠক করেন দময়ন্তী। তিনি বর্তমানে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমিশনারের পদে রয়েছেন। পুলিশি সূত্রের খবর, দময়ন্তী যে তদন্তে নজরদারের দায়িত্ব নেবেন, সে-দিনেই সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ২০১২ সালে পার্ক স্ট্রিটের ধর্ষণ কাণ্ডে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তের আগেই ‘সাজানো ঘটনার’ তত্ত্ব খাড়া করলেও তদন্তে ধর্ষণের ঘটনাকেই তুলে ধরেছিল দময়ন্তীর নেতত্বাধীন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
বিজেপির লিগ্যাল সেলের আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত রাজ্যে সাম্প্রতিক চারটি ধর্ষণ মামলার আবেদনকারিণী। মামলায় রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকার রাস্তায় আলো না-থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। এ দিন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বক্তব্য জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। রাজ্য সরকারের এজি-কে বলা হয়েছে, কাল, শুক্রবারের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্টের প্রতিলিপি সুস্মিতাদেবীকে দিতে হবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্মিতাদেবী নিজের বক্তব্য জানাবেন।
ওই চারটি ধর্ষণ মামলার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার একটি ঘটনা নিয়ে আলাদা একটি মামলা হয়েছিল। সেটি দায়ের করেন সুমিত্রা ভট্টাচার্য নিয়োগী নামে অন্য এক আইনজীবী। একই সঙ্গে শুনানি হচ্ছে সেটির। সুমিত্রাদেবী জানান, রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে তদন্ত রিপোর্টের প্রতিলিপি দেওয়া হয়নি। কোর্টের নির্দেশে প্রতিলিপি হাতে পেলে তিনি তদন্তের বিষয়ে নিজের বক্তব্য জানাতে পারবেন।