এত দিন পরে ফরেন্সিক বা টাওয়ার ডাম্পিং পদ্ধতির সাহায্য পাওয়া সম্ভব নয় বলেই গোয়েন্দা সূত্রের ধারণা। সিআইডি জানিয়েছে, নিহতের পরিবার এবং তাঁর পরিচিতদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে।
ফাইল চিত্র।
বাণিজ্যিক অফিসের ভিতরে খুন হচ্ছেন মালিক, সেই দৃশ্য ধরে রেখেছে সিসি ক্যামেরা। এমনকি সেই ছবিতে দুই আততায়ীকেও দেখা গিয়েছে বলে এক তদন্তকারী অফিসার জানান। তা সত্ত্বেও বৎসরাধিক কাল ধরে অভিযুক্তদের খোঁজ মেলেনি কেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পুলিশ এক বছর আগের সেই ঘটনার কিনারা করতে না-পারায় এ বার সেই ব্যবসায়ী খুনের তদন্তভার তুলে দেওয়া হল সিআইডি-র হাতে।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নদিয়ার মায়াপুরের গৌরনগরে রসিকশেখর প্রভু নামে এক ঘি ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর আসল নাম রিপন দাস। দীক্ষা নেওয়ার পরে তাঁর নাম হয় রসিকশেখর। ওই দিন সকালে নিজের অফিসেই ছিলেন তিনি। মোট চার রাউন্ড গুলি চলে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের পথে মারা যান তিনি। প্রাথমিক ভাবে ওই ঘটনার তদন্ত করে স্থানীয় থানা। কিন্তু প্রায় এক বছর তদন্ত চালিয়েও কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি তারা। এখন তদন্তভার হাতে নিয়েই কেস ডায়েরি-সহ ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিআইডি-র একটি দল।
মায়াপুরের নামহট্টের একটি আবাসনে থাকতেন ওই ব্যবসায়ী। গৌরনগরে যে-অফিসে তিনি খুন হন, সেটি আদতে তাঁর এক আত্মীয়ের। তার ভিতরেই তাঁর নিজের অফিস ছিল। সিআইডি জানায়, প্রথমে এক দুষ্কৃতী সেখানে যায় ক্রেতা সেজে কিছু পরে ঢোকে অন্য এক দুষ্কৃতী। সে ভিতরে ঢুকেই রসিককে গুলি করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, স্থানীয় থানা ঘটনার তদন্ত করলেও ঘটনাস্থলের ফরেন্সিক পরীক্ষা করায়নি। ফলে তদন্তে যে-সব তথ্যপ্রমাণ জরুরি ছিল, তার অনেক কিছুই জোগাড় করা হয়নি। অভিযোগ, ঘটনাস্থল থেকে কোনও ফিঙ্গারপ্রিন্টের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। এলাকার মোবাইল ফোনের টাওয়ার ডাম্পিং পদ্ধতিরও সাহায্য নেওয়া হয়নি। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, সেটা করা হলে, সে-দিনই ঘটনাস্থলে কারা ছিলেন, তাঁদের শনাক্ত করা যেত। নিহত ব্যবসায়ীর ফোনের কল ডিটেলসও সংগ্রহ করা হয়নি।
এত দিন পরে ফরেন্সিক বা টাওয়ার ডাম্পিং পদ্ধতির সাহায্য পাওয়া সম্ভব নয় বলেই গোয়েন্দা সূত্রের ধারণা। সিআইডি জানিয়েছে, নিহতের পরিবার এবং তাঁর পরিচিতদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে ওই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। অভিযুক্তেরা বাইরে থেকে এসেছিল বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। এক সিআইডি-কর্তা জানান, তাঁরা সবে ঘটনার তদন্তভার নিয়েছেন। সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।