স্যালাইনের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে। —প্রতীকী চিত্র।
এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল শুক্রবার সকালে। সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিলেন আরও তিন প্রসূতি। শনিবারও তাঁদের সেই অবস্থা থেকে বার করে আনা যায়নি। দু’জন এখনও ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। আর এক জন আইসিইউ-তে ভর্তি। অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে বলেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রসূতিরা। তার জেরেই মৃত্যু হয় এক জনের। সেই অভিযোগের তদন্তে শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছে রাজ্য সরকার গঠিত ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
একই দিনে অস্ত্রোপচার করে সন্তানের জন্ম দেওয়া পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যালে। তাঁদেরই এক জন, মামণি রুইদাসের (২৫) মৃত্যু হয় শুক্রবার সকালে। ওই ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালের স্যালাইন (রিঙ্গার্স ল্যাকটেট) নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি গড়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। প্রসূতিদের যে স্যালাইন এবং ওষুধ দেওয়া হয়েছিল, তার নমুনা পরীক্ষায় পাঠিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলের দল। মেদিনীপুর মেডিক্যালও ‘মাল্টিডিসিপ্লিনারি কমিটি’ গড়েছে।
‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় গত ১০ ডিসেম্বর ওই স্যালাইনের উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও মেনেছেন, গত নভেম্বরে স্যালাইন উৎপাদক ওই সংস্থাটিকে কর্নাটক সরকার কালো তালিকাভুক্ত করার পরে রাজ্যও ওই নির্দেশ দেয়। সব সরকারি হাসপাতালকে সংস্থার ১৪ ধরনের ওষুধ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তার পরেও ওই স্যালাইন কী ভাবে সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা হল, মামণির মৃত্যুর পরে সেই প্রশ্ন উঠেছে। এই সব বিষয় খতিয়ে দেখতেই শনিবার হাসপাতালে গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর গঠিত তদন্ত কমিটি।
শনিবার হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত রাউত বলেন, ‘‘দু’জন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। এক জন আইসিইউ-তে। আর এক জন জেনারেল বেডে রয়েছেন। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন তাঁরা।’’ তবে তাঁদের অবস্থা এখনও স্থিতিশীল নয় বলেই জানিয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্য। তাঁর বক্তব্য, প্রয়োজনে ভেন্টিলেশনের প্যারামিটার বদলানো হতে পারে। শনিবারই বৈঠক রয়েছে। তার পরেই সব কিছু বলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি।