Anubrata Mondal

চাঁদু-বিকাশ না রানা, কেষ্টহীন তৃণমূলে ধন্দ

অনুব্রত মণ্ডল শুক্রবার এজলাসে দলের নেতা-কর্মীদের বলেন, তাঁরা যেন ‘চাঁদু-বিকাশের’ কথা শুনে চলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

  সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৬
Share:

অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

তিনি আপাতত জেলে। তা হলে জেলায় দলের হাল কে ধরবে? এই নিয়েই বীরভূমে এখন জোর জল্পনা। কারণ, তিনি, অর্থাৎ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল শুক্রবার এজলাসে দলের নেতা-কর্মীদের বলেন, তাঁরা যেন ‘চাঁদু-বিকাশের’ কথা শুনে চলে। আবার সম্প্রতি দলের রাজ্য নেতৃত্ব পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন বিধায়ক অভিজিৎ (রানা) সিংহকে।

Advertisement

দলের নিচুতলার কর্মীদের প্রশ্ন, তাঁরা কার নির্দেশ মান্য করবেন?

সূত্রের খবর, শুক্রবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে দলের যে সব নেতা দেখা করতে যান, তাঁদের ‘কেষ্টদা’ বলেন, ‘‘তোরা মন দিয়ে একসঙ্গে কাজ কর। আমার অনুপস্থিতিতে চাঁদু (মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ) আর বিকাশের (জেলা সভাধিপতি ও বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী) কথা শুনে চলবি।’’

Advertisement

যদিও অনুব্রতর এই বার্তার দু’দিন আগে বুধবারই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর চিঠি এসেছে বীরভূমের নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসকের কাছে। সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে অভিজিৎকে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধানও করা হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে ধন্দে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা। তাঁদের কেউ কেউ বলছেন, এর মধ্যেই ‘কেষ্টদা’ বার্তা দিয়েছেন: ‘গ্রুপবাজি’ বন্ধ করতে হবে। তার পরে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীকে মাথায় রেখে সমন্বয় কমিটিও গড়া হয়েছে।

এ বারে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বও অভিজিৎকে দেওয়ায় কেষ্ট প্রবল অসন্তুষ্ট বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। তাই তিনি ‘চাঁদু-বিকাশের’ নাম করে বার্তা দিয়েছেন। অভিজিৎ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। বিকাশ বলেন, ‘‘আসানসোলে এজলাসে জেলা সভাপতি কী বলেছেন আমার জানা নেই।’’ চন্দ্রনাথও বলেন, ‘‘আমি কিছু শুনিনি।’’

আসানসোলে যিনি উপস্থিত ছিলেন, সেই তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়, ‘‘দল চালাবে বিকাশ-চাঁদু— এ ভাবে বলেননি। কেষ্টদা বলেছেন, যা করবি চাঁদু-বিকাশকে জিজ্ঞাসা করে করবি।’’ এতে কোর কমিটির গুরুত্ব নিয়ে কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি হবে কি না, সে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন মলয়। দল সূত্রে খবর, আজ, রবিবার সিউড়িতে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক আছে।

তৃণমূলের এই অবস্থায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার কটাক্ষ, ‘‘উপরতলায় কোন নেতা টাকা পৌঁছে দিতে পারবেন, সেই অঙ্ক কষেই মন্ত্রী (ফিরহাদ হাকিম) এসে কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। তাঁর দেওয়া ‘বাঘ’ তকমায় মন ভরেনি কেষ্টর।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘ওদের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে, সন্দেহ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement