প্রতীকী ছবি।
সরকার চালান, বইও লেখেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব বই যাতে সকলের কাছে পৌঁছয়, সেই জন্য জেলার প্রতিটি সরকার পোষিত গ্রন্থাগারে তাঁর বই রাখার নির্দেশ দিল হাওড়া জেলা গ্রন্থাগার। জেলার ১৩৬টি গ্রন্থাগারকে সম্প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা গ্রন্থাগারিক অমিতকুমার পাল। শুধু ওই জেলা নয়, রাজ্যের সব গ্রন্থাগারেই মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই রাখার দাবি জানিয়েছে হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট পাবলিক লাইব্রেরি উন্নয়ন মঞ্চ।
রাজ্যপাট সামলানোর অনেক আগে থেকেই নিয়মিত লেখালেখি করে আসছেন মমতা। তাঁর লেখায় জায়গা পাচ্ছে পাহাড়, জঙ্গলমহল এবং তাঁর জীবনের নানা সংগ্রামের কাহিনি। তার পাশাপাশি নামাঞ্জলি, কথাঞ্জলি, অনুভূতি, জীবন-সংগ্রাম, আজব ছড়ার মতো বইও রয়েছে তাঁর।
কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সিবিএসই, আইসিএসই, আইএসসি পরীক্ষায় কৃতীদের পুরস্কৃত করার সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর বই উপহার দেওয়া হয়। বইমেলায় তাঁর বইয়ের বিক্রি চোখে পড়ার মতো বলেই দাবি পুস্তক বিক্রেতাদের। হাওড়া জেলা গ্রন্থাগারের এক কর্তা জানান, বাড়তে থাকা চাহিদা মেটাতে এবং সকলকে মুখ্যমন্ত্রীর জীবন-সংগ্রামের ইতিহাস জানাতেই এই উদ্যোগ।
গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান, বই বাছাইয়ের ক্ষমতা প্রতিটি জেলার গ্রন্থাগার-কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। তাই জেলাগুলি আলাদা ভাবে সেই সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। হাওড়া সে-ভাবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাওড়ার জেলা গ্রন্থাগারিক অমিতবাবু বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় ১৩৬টি গ্রন্থাগার রয়েছে। তাদের বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ৮৬টি বই যেন গ্রন্থাগারে রাখা হয়। আমিও মনে করি, মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই সকলেরই পড়া উচিত। তার মধ্যেই উন্নয়ন মঞ্চ থেকে এই প্রস্তাব আসে। আমি তাতে সম্মতি জানিয়ে নির্দেশ দিয়েছি।’’
শুধু জেলায় নয়, রাজ্যের প্রায় আড়াই হাজার গ্রন্থাগারে মুখ্যমন্ত্রীর বই রাখার দাবি তুলেছে হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট পাবলিক লাইব্রেরি উন্নয়ন মঞ্চ। সংগঠনের সম্পাদক নিশীথ সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই সকলেরই পড়া উচিত। কারণ, কী ভাবে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, তার মন্ত্র রয়েছে ওই সব বইয়ে। গ্রন্থাগারে থাকলে বিনামূল্যে সকলে তা পড়ার সুযোগ পাবেন। তাই সব জেলার গ্রন্থাগারেই ওই সব বই থাকা প্রয়োজন।’’ বিশ্ব বাংলার স্টলেও মুখ্যমন্ত্রীর বই পাওয়া যায়। কিন্তু সকলের পক্ষে সেখান থেকে বই কেনা সম্ভব নয়। তাই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছে মমতার লেখা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে হাওড়া জেলা গ্রন্থাগার।
জানুয়ারিতে সমাজসেবা ও শিল্প-সাহিত্যে অবদানের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্মানিক ডিলিট নিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বিশ্বাস করুন, আমি ডিগ্রিটা কোনও দিন ব্যবহার করব না। আপনারা আমাকে সাম্মানিক দিয়েছেন, সেটা সাম্মানিকই থাকবে। আপনারা আমার জীবনকে পূর্ণ করে দিয়েছেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর জীবন কত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে কী ভাবে পূর্ণ হয়ে উঠল, সেই অভিজ্ঞতার শরিক হতে হলে তাঁর লেখা বইগুলি পড়াও জরুরি বলে জানাচ্ছেন তৃণমূলের নেতানেত্রীরা।