প্রতীকী ছবি
লক্ষ লক্ষ টাকা কোর্স ফি। অভিযোগ, খানকতক ক্লাস সেরেই চার বছর পরে মিলে যাচ্ছে নার্সিং ডিগ্রি। কিন্তু এক দিনের জন্যও হাতেকলমে তালিমের ব্যবস্থা নেই।
রাজ্যে এ রকম ‘নার্সিং স্কুল’-এর সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। অধিকাংশই ভিন্ রাজ্যের নার্সিং কলেজের অনুমোদন প্রাপ্ত বলে দাবি করে। অভিযোগ, এ রাজ্যের নানা প্রান্তে অনেকেরই ক্লাস চলে হোটেল বা বিয়েবাড়ি ভাড়া করে। এ রাজ্যের বেশ কিছু নামকরা বেসরকারি হাসপাতালও এ ধরনের কোর্স করাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমন কলেজগুলির বেশির ভাগই বেআইনি ভাবে চলছে বলে গত বছর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন তমলুকের বাসিন্দা তহিদুল ইসলাম। সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ন’টি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বিষয়টি নজরে রাখতে বলেছি। পুলিশকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। আগামী দিনেও এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিষয় আমাদের নজরে এলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েক জন অভিভাবক স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলিতে টাকা ঢেলে কোর্স করা কতটা নিরাপদ, তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাক স্বাস্থ্য দফতর। তহিদুল বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সরব। তিনি জানান, কোনও প্রতিষ্ঠানের কলেজ হয় তো কর্নাটকে। দূরশিক্ষার মাধ্যমে ক্লাস চলছে উলুবেড়িয়ায়। বিএসসি নার্সিংয়ের মতো কোর্সে যেখানে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস বাধ্যতামূলক, এই সব প্রতিষ্ঠানে সে সবের বালাই নেই বলে অভিযোগ। পরীক্ষা দিতে হয় ভিন্ রাজ্যে গিয়ে।
তহিদুল নানা মহলে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছিলেন, ভুয়ো এই সব প্রতিষ্ঠানগুলি সংবাদপত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেয়। কিন্তু রাজ্য নার্সিং সংসদ বা কেন্দ্রের ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিলের অনুমোদন নেই।
সোমবার দুই মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও বাঁকুড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের স্বাস্থ্য অধিকর্তার নির্দেশ পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, বহু অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান বেআইনি ভাবে এ রাজ্যে নার্সিং কোর্স করাচ্ছে। পড়ুয়া ভর্তির জন্য তারা সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে বলে দফতরের নজরে এসেছে। ন’টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, নার্সিং কোর্সে এই প্রতিষ্ঠানগুলি কোনও ভাবে পড়ুয়া ভর্তি করতে পারে না। পড়ুয়ারা যাতে প্রতারিত না হন, সে জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অবিলম্বে এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।