বন্দি শিল্পীর হাত ধরে মণ্ডপে তেলঙ্গানার এনকাউন্টার

সরস্বতী পুজোয় সেই ঘটনাকে থিম করেন নবীন সঙ্ঘের কর্মকর্তারা। নির্মাণের বরাত দেওয়া হয় মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারের আবাসিক চন্দনকে।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৮
Share:

এই চার অভিযুক্তেরই এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছিল পুলিশ। —ফাইল চিত্র

অপরাধীর হাতে অপরাধের পুনর্নির্মাণ! তদন্তের সুবিধার জন্য পুলিশ অনেক সময়েই এটা করে থাকে। তবে এ বার সেই পুনর্নির্মাণ বিদ্যাদেবীর পুজো প্রাঙ্গণে। ঘটনাস্থল মেদিনীপুর শহরের উদয়পল্লির নবীন সঙ্ঘ। নির্মাতা বন্দি শিল্পী চন্দন চন্দ।

Advertisement

২৭ নভেম্বর তেলঙ্গানার এক তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ এবং খুনের পরে দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। ৬ ডিসেম্বর ভোরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় চার অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন এবং চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশবুলু। পুলিশের দাবি, গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতেই ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ওই অভিযুক্তদের শাদনগরে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর পৌনে ৬টা নাগাদ পুলিশের রিভলভার ছিনিয়ে নিয়ে গুলি ছুড়তে শুরু করে দুই অভিযুক্ত। বাকিরা পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। চার অভিযুক্ত নিহত হয়। আত্মরক্ষার জন্যই পুলিশ গুলি চালিয়েছিল বলে দাবি করেন সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনার। যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। মামলাও চলছে।

সরস্বতী পুজোয় সেই ঘটনাকে থিম করেন নবীন সঙ্ঘের কর্মকর্তারা। নির্মাণের বরাত দেওয়া হয় মেদিনীপুর মুক্ত সংশোধনাগারের আবাসিক চন্দনকে। খুনের মামলায় দীর্ঘদিন লৌহকপাটের অন্তরালে ছিলেন তিনি। ভাল আচরণের সুবাদে পরে তাঁর ঠাঁই হয় মুক্ত সংশোধনাগারে। নিয়ম অনুসারে সকালে মুক্ত সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে রাত ৭টা-সাড়ে ৭টার মধ্যে ফিরতে হয় সংশ্লিষ্ট বন্দিকে। সংশোধনাগারের বাইরে বেরিয়ে উপার্জনের সুযোগ পান তাঁরা।

Advertisement

মণ্ডপে তেলঙ্গানার ‘এনকাউন্টার’-কে রূপ দিতে চন্দনের সহকারী ছিলেন মেদিনীপুরে সংশোধনাগারের বাসিন্দা সুদীপ সেন, পীষূষ গোস্বামী, যুদ্ধ বাউড়ি, মঙ্গল হেমব্রমেরা। ‘এনকাউন্টার’ প্রসঙ্গে চন্দন বলেন, ‘‘যে-অপরাধ করেছিল ওরা, তাতে শাস্তি অবশ্যই প্রাপ্য ছিল। আদালত মৃত্যুদণ্ডও দিতে পারত। বিচার ব্যবস্থার উপরে আস্থা রাখা উচিত ছিল।’’ থিমে বিভিন্ন মূর্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে এনকাউন্টারের খুঁটিনাটি। ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে যে-মূর্তি আদালতে থাকে, সেটিকেও ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ওই মূর্তির হাতে থাকা দাঁড়িপাল্লার একটি দড়িকে কাটা হিসেবে দেখিয়েছেন চন্দন। ফলে দাঁড়িপাল্লার একাংশ ঝুলে পড়েছে। এনকাউন্টারের পক্ষেই সওয়াল করছেন পুজোর উদ্যোক্তা সোমনাথ সরকার। তিনি বলেন, ‘‘ওরা যে-অপরাধ করেছিল, তাতে এনকাউন্টারে ভুল হয়নি।’’

এ বার ২৬টি ছোট-মাঝারি-বড় সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছেন চন্দন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement