স্মরণসভা শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
সকালেই শহিদবেদিতে মালা দিয়ে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতাও করেছিলেন। নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণের সেই কর্মসূচিতে ডাক না পাওয়ায় বিরোধী দলনেতার পাল্টা স্মরণসভার আয়োজন করলেন একঝাঁক স্থানীয় বিজেপি নেতা। যা নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে। শুভেন্দুর কর্মসূচিতে দলীয় কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে তৃণমূলও।
রবিবার সকালে করপল্লির শহিদবেদিতে মালা দিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই কর্মসূচিতে গোকুলনগরের ‘দাপুটে’ বিজেপি নেতা দেবাশিস দাস, অশোক করণেরা গরহাজির থাকায় তখন থেকেই গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। শুভেন্দুর পরে শহিদবেদিতে স্মরণসভার আয়োজন করে তৃণমূলও। ঠিক তার পরেই দেখা গেল, ২০০৭ সালের জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা অশোক, দেবাশিসেরা বেদিতে পৌঁছে আলাদা করে শহিদদের উদ্দেশে তর্পণ করলেন।
স্মরণসভা শেষে দেবাশিস জানান, শুভেন্দুর কর্মসূচিতে তাঁদের ডাকা হয়নি। সেই কারণেই পৃথক স্মরণসভার আয়োজন করেছেন তাঁরা। দেবাশিসের দাবি, ‘‘গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছিলাম আমরা। হয়তো তারই প্রতিদান পাচ্ছি। জমি আন্দোলনের শুরু থেকেই জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছিলাম। তৃণমূলে লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগে ২০২০ সালে শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম আমরা। দুর্নীতির প্রতিবাদ জানানোয় এ বার আমরাই শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপির মূল অনুষ্ঠানে ডাক পেলাম না।’’
শহিদ স্মরণকে কেন্দ্র করে বিজেপির এই গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করেছে শাসকদল। তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘‘আজকের বিজেপি নেতা অশোক করণ, দেবাশিস দাসেরা যে জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন, এটা সকলেই জানেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ওঁরা শুভেন্দু অধিকারীর মঞ্চে আসেননি। আসলে ওঁর প্রতি চরম ঘৃণা থেকেই বিজেপির কর্মসূচিতে যান অশোক-দেবাশিসেরা।’’
শুভেন্দুর কর্মসূচি নিয়েও কটাক্ষ করেছেন সুফিয়ান। তিনি বলেন, ‘‘২০০৭ সালের ৩ জানুয়ারি ভুতার মোড় থেকে প্রথম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির পথ চলা শুরু হয়েছিল। সে দিন নন্দীগ্রামে বিজেপির জন্ম হয়নি। যাদের বিরুদ্ধে জমি আন্দোলনকারীদের খুন, ধর্ষণের অভিযোগ, তারাই এখন বিজেপিতে যোগ দিয়ে জমি আন্দোলনকারীদের রক্তে রাঙা শহিদবেদিতে মালা দিচ্ছেন!”