লতি বছরের শেষে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাওয়া গেলে সেই ট্রেন যাতে চালানো যায়, তার প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে পূর্ব রেল। গুরুত্বপূর্ণ দু’টি রুটের ব্যস্ত অংশে দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন ‘কবচ’ ব্যবস্থা ব্যবহার করা হবে। পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট অন্য সব রেলই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
ফাইল চিত্র।
পূর্বা এক্সপ্রেসে এখন হাওড়া থেকে দিল্লি যেতে বা দিল্লি থেকে হাওড়ায় আসতে ২২ ঘণ্টা সময় লাগে। হাওড়া থেকে ১৬ ঘণ্টায় দিল্লি পৌঁছে দেয় রাজধানী এক্সপ্রেস। ‘মিশন রফতার’ প্রকল্পে দিল্লি ও হাওড়ার দূরত্ব ১২ ঘণ্টায় অতিক্রম করার পরিকল্পনা করছে রেল। এই প্রকল্পের আওতায় নয়াদিল্লি-হাওড়া এবং নয়াদিল্লি-মুম্বই রুটে ট্রেনের সর্বাধিক গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটারে নিয়ে যাওয়ার কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করতে চাইছে তারা। লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ধার্য আছে ঠিকই। তবে রেল চলতি বছরের মধ্যেই ওই কাজ সেরে ফেলতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
পরিকল্পনা সফল হলে হাওড়া ও নয়াদিল্লির ট্রেন-দূরত্ব কমিয়ে মাত্র ১২ ঘণ্টায় আনা যাবে বলে জানাচ্ছে রেল মহল। নয়াদিল্লি-মুম্বই এবং নয়াদিল্লি-হাওড়া রুটে ট্রেনের সর্বাধিক গতি বাড়ানোর জন্য প্রায় তিন বছর ধরে নানা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পারিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। ট্র্যাক, ওভারহেড কেব্ল, সিগন্যালিং ব্যবস্থার সংস্কার ছাড়াও উন্নত ‘রোলিং স্টক’ বা রেলগাড়ি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষাও সেই পরিকল্পনার অঙ্গ। এর মধ্যে পূর্ব রেলের আওতায় থাকা প্রায় ২৬০ কিলোমিটার রুটে ট্র্যাক এবং ওভারহেড কেব্লের পরিকাঠামো তৈরির কাজ মোটামুটি সম্পূর্ণ বলে রেল শিবিরের খবর। সিগন্যালিং পারিকাঠামো সংস্কারের জন্য সম্প্রতি টেন্ডার বা দরপত্র ডাকা হয়েছে। ওভারহেড কেব্লে বাড়তি বিদ্যুৎ জোগান দিতে ডিভিসি এবং অন্যান্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে চুক্তির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে আগেই। রেলের তরফে বিভিন্ন সাবস্টেশন নির্মাণের কাজও সম্পূর্ণ হওয়ার মুখে।
একমাত্র ‘রোলিং স্টক’ বা উন্নত মানের ট্রেন নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হলেও তা এখনও সাঙ্গ হয়নি বলে রেল মহলের খবর। সফরের সময় কমাতে মুম্বই-দিল্লি রুটে সামনে-পিছনে দু’টি ইঞ্জিন ব্যবহার করে রাজধানী এক্সপ্রেস চালানো হচ্ছে পুশ-পুল ব্যবস্থায়। তাতে সফরের সময় প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত কমেছে। হাওড়া-দিল্লি রুটে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হলেও নিয়মিত ভাবে ওই পদ্ধতি ব্যবহার করে ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি।
চলতি বছরের শেষে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাওয়া গেলে সেই ট্রেন যাতে চালানো যায়, তার প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে পূর্ব রেল। গুরুত্বপূর্ণ দু’টি রুটের ব্যস্ত অংশে দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন ‘কবচ’ ব্যবস্থা ব্যবহার করা হবে। পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট অন্য সব রেলই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
রেল সূত্রের খবর, এখন হাওড়া থেকে নয়াদিল্লি যেতে রাজধানী এক্সপ্রেসের গড়ে ১৫-১৬ ঘণ্টা লাগে। পুশ-পুল পদ্ধতিতে ওই ট্রেন চালাতে পারলে সফরের সময় ঘণ্টাখানেক কমতে পারে বলে জানাচ্ছেন রেলের আধিকারিকেরা। রেলকর্তাদের বক্তব্য, দু’টি ইঞ্জিন একত্রে ব্যবহার করলে ট্রেনের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। তবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন-সেট মিললে আলাদা ভাবে ওই পরীক্ষার প্রয়োজন সে-ভাবে পড়বে না বলেই মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ। সে-ক্ষেত্রে অতি দ্রুত গতির ট্রেন-সেট চালিয়ে পরীক্ষা করলে পুরো ব্যবস্থার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা সম্ভব হবে।