প্রতীকী ছবি।
ফের কি ট্রেনে মিলবে রান্না করা খাবার?
রেল সূত্রের দাবি, অতিমারি পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরে এমনই পরিকল্পনা করেছে রেল বোর্ড। যদিও রেলের কর্তারা এ নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে চাননি। মুখে কুলুপ এঁটেছেন খাবারের দায়িত্বে থাকা ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশনের (আইআরসিটিসি) আধিকারিকেরাও। তবে রেলের একটি সূত্রের দাবি, দিন কয়েকের মধ্যেই যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য সংক্রান্ত কমিটি এ নিয়ে বৈঠকে বসতে পারে। ওই কমিটির সুপারিশ পেলে রেল বোর্ড প্যান্ট্রি কার পরিষেবা ফিরিয়ে আনতে পারে। চলতি মাসেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে বলে রেলের একাংশ মনে করছেন।
অতিমারি পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় ট্রেনে রান্না করা খাবার পরিবেশন বন্ধ রেখেছিল রেল। ধাপে ধাপে ট্রেন পরিষেবা শুরু হলেও ট্রেনের মধ্যে মূলত চা, কফি, কেক, বিস্কুট এবং কিছু ক্ষেত্রে ‘রেডি টু ইট’ খাবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল কেটারিং পরিষেবা। রেল বোর্ড সূত্রে খবর, ট্রেনে রান্না করা খাবার পরিবেশন বন্ধ রাখার জন্য রেলের প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা কম হচ্ছে। সংক্রমণ কমে আসায় বিভিন্ন রাজ্যে রেস্তরাঁ খুলে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার। তাই সব দিক দেখেই আইআরসিটিসির
বেস কিচেনগুলি চালু করার পাশাপাশি প্যান্ট্রি কার পরিষেবা খুলে দেওয়ার কথা ভাবছে রেল বোর্ড। এ প্রসঙ্গে এক রেল কর্তা বলেন, ‘‘রান্না করা খাবার পরিবেশনের দাবি নানা জায়গা থেকে এসেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, বর্তমানে দেশে ১৯টি রাজধানী, ২২টি শতাব্দী এক্সপ্রেস, ১৯টি দুরন্ত এক্সপ্রেস, ২৯৬টি এক্সপ্রেস, দু’টি তেজস, একটি করে গতিমান এবং বন্দেভারত এক্সপ্রেসে অন বোর্ড কেটারিং বা ট্রেনে প্যান্ট্রি কারের মাধ্যমে খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
বস্তুত, উৎসবের মরসুমে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে থাকা ট্রেন পরিষেবার অনেকগুলিই ফের চালু করেছে রেল। বর্তমানে প্রাক-করোনা সময়ের ৯৬ শতাংশ ট্রেন চলছে। মানুষের ট্রেনে যাতায়াতের প্রবণতাও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় পরের তিন মাসে রেলের যাত্রী ভাড়া খাতে আয়ও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দূরপাল্লার ট্রেনে টিকিটের চাহিদাও বাড়ছে। যাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকায় ট্রেনে রান্না করা খাবার এবং প্যান্ট্রি কার পরিষেবা ফিরিয়ে আনার দাবিও জোরদার হয়েছে। পুজোর আগেই এ রাজ্যে হাওড়া, শিয়ালদহ, আসানসোল, দুর্গাপুর, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে আইআরসিটিসির ফুড প্লাজ়া খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে যাত্রীদের জন্য বাংলার খাবারের বিশেষ মেনুও মিলছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রেনে কেটারিং পরিষেবা চালু হলে তাই দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের সমস্যা কমবে বলে মনে করছেন অনেকে।