বাজেটের সমালোচনা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। — নিজস্ব চিত্র।
নির্মলা সীতারামনের বাজেটে ভবিষ্যতের জন্য কোনও আশার আলো নেই বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, দিশাহীন এই বাজেটে যা আছে তা শুধুই অন্ধকার, শুধুই অমাবস্যা। এই বাজেট গরিব এবং বেকারদের বিরোধী বলেই মনে করছেন তিনি। স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন মমতা। এই ক্ষেত্রে মোদীর সরকার পশ্চিমবঙ্গকে নকল করছে বলেও মনে করেছেন তিনি। বীরভূমে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তিনি হলে গরিব ও সাধারণ মানুষের জন্য বাজেট আধ ঘণ্টায় করে দিতেন।
বুধবার সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট বক্তৃতার কিছু ক্ষণ পর বীরভূমের বোলপুরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। সেখানে কেন্দ্রীয় বাজেট প্রসঙ্গে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার একটা নাকি বাজেট করেছে। বাজেট না কি অন্য কিছু? মুখে বলা হচ্ছে, দারুণ বাজেট হয়েছে। কী দারুণ? একটা কথা বেকারদের জন্য বলা নেই।’’ মমতার অভিযোগ, ‘‘আগের বছর ১০০ দিনের কাজের টাকা কমিয়েছিল। এ বার পুরো কোপ (ড্র্যাস্টিক কাট) বসিয়েছে।’’ ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলেও আবার অভিযোগ করেছেন তিনি। মমতার কথায়, এটা ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’।
কেন্দ্রীয় বাজেটে গ্যাসের দাম নিয়ে কোনও কথা নেই বলেও জানিয়েছেন মমতা। কেন্দ্রের চালু করা ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র কথা বক্তৃতায় তুলে ধরেন মমতা। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘সুজলা না উজ্জ্বলা কী একটা করেছিল? পাচ্ছেন আপনারা গ্যাস?’’ এর পরই মমতার সংযোজন, ‘‘এই বাজেট ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে নয়। এটা সুবিধাবাদী বাজেট। এই বাজেটে আশার আলো নেই। অন্ধকার, অমাবস্যা আছে। এটা গরিব বিরোধী বাজেট।’’
বাজেটে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তা নিয়ে মমতার প্রতিক্রিয়া, ‘‘আজ সব নকল করার খেলা। আমরা ১১ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী করেছি। ওরা টুকলি করে সংখ্যা দেখাচ্ছে। কিন্তু ঠোকরানো কমাচ্ছে না।’’ এই সূত্রেই তিনি বলেন, ‘‘যে বাজেট ওঁরা করেছেন, আমায় করতে দিতেন, আমি আধ ঘণ্টা সময় নিতাম। কী করে গরিব, সাধারণ মানুষের বাজেট করতে হয়, কী করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রুখতে হয় তা আমি জানি। আমি অনেক ডিপার্টমেন্টে কাজ করে এসেছি। আমরাও বাজেট করি। আমরা কর বাড়াই না।’’ বাজেটকে ভাঁওতা এবং লোকদেখানো বলেও আখ্যা দিয়েছেন মমতা।