বন্ধ চললেও দোকান খুলেছে সুকনায়। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বন্ধ ওঠেনি এখনও। তবে খুব শীঘ্রই তা উঠে যাবে বলে চাউর হয়ে গিয়েছে পাহাড়ে। ফলে, দোকানপাট খোলার জন্য উসখুস করছেন অনেকে। সাহস করে দোকান খুলেও ফেলেছেন কেউ কেউ।
ঘটনা হল, এখন পাহাড়বাসীরা প্রায় সকলেই চাইছেন, আন্দোলন চললেও পুজোর পর্যটন মরসুমটা যেন নষ্ট না হয়। স্কুল-কলেজে ষাণ্মাসিক পরীক্ষাগুলোর ব্যবস্থা হোক। বন্ধে যে ক’দিন পড়াশোনা নষ্ট হয়েছে তা বাড়তি ক্লাস করে পুষিয়ে দেওয়া হোক। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু স্কুলে প্রাইভেট টিউশনের আদলে পড়ানো শুরু হয়েছে। সেবকের মতোই দোকান-বাজার খুলেছে শিলিগুড়ির উপকন্ঠ সুকনায়। ফুটপাতে বসেছে আনাজের দোকান, দু’একটি পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী টোটো-অটোও চলছে। পিকেটিং নেই প্রায় কোথাও।
পৃথক রাজ্যের দাবিতে মিছিল করাকে কেন্দ্র করে এক শনিবার এই সুকনাই রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। পুলিশের দিকে ছোড়া হয়েছিল ঝাঁকে ঝাঁকে পেট্রোল বোমা। মাসখানেকের ব্যবধানেই জঙ্গি আন্দোলনের রেশ উধাও। বরং প্রকট বাসিন্দাদের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা। দিনকয়েক আগেও সুকনার রাস্তায় ইট-বোল্ডার ফেলে, তাতে দলের পতাকা গেঁথে গাড়ি অবরোধ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ দিন গিয়ে দেখা গেল রাস্তা মোটের উপর নির্ঝঞ্ঝাট। পিকআপ ভ্যান থেকে অটো-টোটো সবই চলছে অবাধে।
তবে শুক্রবার রাতে ফের বিস্ফোরণ হয়েছে কালিম্পঙের ২৭ মাইল এলাকায়। একটি পণ্য বোঝাই ট্রাক দাঁড় করিয়ে খুকরি নিয়ে কয়েকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ট্রাকের চালক এবং খালাসি পালিয়ে গেলে, রাস্তায় বিস্ফোরণ ঘটায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের দাবি, বিস্ফোরণে ব্যবহার করা হয়েছে আইইডি। তাতে গর্ত হয়ে গিয়েছে রাস্তায়। ট্রাকটিও তুবড়ে গিয়েছে। কালিম্পঙের পুলিশ সুপার অজিত যাদব বলেন, ‘‘আগের বিস্ফোরণগুলির মতোও এটিতেও আইডি ব্যবহার করা হয়েছে। কারা এই বিস্ফোরণের পেছনে রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, শিলিগুড়ির থেকে কালিম্পঙের দিকে যাচ্ছিল ট্রাকটি।
এ দিকে মোর্চার পক্ষ থেকে বিনয় তামাঙ্গের নেতৃত্বে ৫ জন ২৯ অগস্টের বৈঠকে যোগ দেবেন বলে এ দিন ঘোষণা করা হয়েছে। জিএনএলএফের নীরজ জিম্বা তো যাচ্ছেনই, মন ঘিসিঙ্গও থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে। গোর্খা লিগের তরফে প্রতাপ খাতি সহ অন্তত ৩ জন, জাপের পক্ষে হরকাবাহাদুর ছেত্রী সহ ৫ জনের যাওয়ার কথা। আজ, রবিবার গোর্খাল্যান্ড দাবি আদায় সমন্বয় কমিটির বৈঠক হবে দার্জিলিঙে। সেখানে বন্ধ কবে উঠবে তা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ আলোচনার আগে বন্ধ উঠলে দর কষাকষিতে বাড়তি সুবিধা মিলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। মোর্চার তরফে এ দিন চকবাজারে মিছিল হয়েছে। নারী মোর্চার নেত্রী বলেন, ‘‘আমরাও আলোচনার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। পাহাড়বাসীরা যা চাইছেন তা-ই হবে।’’